বিশ্ব ডেস্ক: বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনায় দেখা যায়, দক্ষিণ পূর্ব এশিযার দেশ সিঙ্গাপুর থেকে বাণিজ্যিক জাহাজগুলো পণ্য নিয়ে দুটি রুটে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় যাতায়াত করে থাকে।
লোহিত সাগরের বাণিজ্যিক গুরুত্ব বেশি কেন?
একটি রুটের জাহাজ লোহিত সাগর(রেড সি) দিয়ে মিশরের সুয়েজ খাল পাড়ি দিয়ে ভূমধ্যসাগর হয়ে নেদারল্যন্ড বা ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার পথে রওয়ানা হয়। এই রুটটি অনেক সংক্ষিপ্ত ও ২৬দিনে গন্তব্যে পৌঁছায় বলে জাহাজের জ্বালানি খরচ কম পড়ে। পণ্য পরিবহন ভাড়াও কম হয়। এ কারণে লোহিত সাগরের বাণিজ্যিক গুরুত্ব অনেক বেশি।
কিন্ত কোন কারণে লোহিত সাগর(রেড সি) বা সুয়েজ খালে সমস্যা দেখা দিলে পূর্ব এশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে সে জাহাজকে পর্তুগিজ অভিযাত্রীদের আবিষ্কার করা উত্তমাশা অন্তরীপ(কেপ অব গুড হোপ) দিয়ে ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার যেতে সময়ের দরকার হয় ৩৬ দিন।
সময় যেমন ১০দিন বেশি লাগে তেমনি জাহাজের জ্বালানি ও অন্যান্য খরচও বেশি।
বিশ্বের সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৩০% পণ্যবাহী জাহাজ লোহিত সাগর(রেড সি) ও মিশরের সুয়েল খাল পাড়ি দিয়ে চলাচল করে থাকে।
উত্তমাশা অন্তরীপ দক্ষিণ আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূলে অবস্থিত কেপ পেনিনসুয়ালার একটি অন্তরীপ।
পর্তুগিজ অভিযাত্রী বার্তোলোমিউ ডিয়াস ১৪৮৮ সালে প্রথম কেপ এলাকায় পৌঁছেন এবং অন্তরীপটির নাম দেন ‘কেপ অব স্টর্মস’। পরবর্তী সময় পর্তুগালের দ্বিতীয় অভিযাত্রী নামটি পরিবর্তন করে কেপ অব গুড হোপ বা উত্তমাশা অন্তরীপ নামকরণ করেন। ইউরোপ থেকে ভারত ও পূর্ব এশিয়ায় আসা যাওয়ার নতুন আবিষ্কৃত সমুদ্রপথটি ইউরোপীয়দের মনে বিপুল আশার সঞ্চার করেছিল, যার প্রতিফলন ঘটেছে অন্তরীপটির নামকরণের মধ্যে দিয়ে।
লোহিত সাগর (Red Sea)
লোহিত সাগর (Red Sea), ভারত মহাসাগরের একটি নোনা জলের খাঁড়ি, জলের একটি অসাধারণ অংশ যা তার শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য, ঐতিহাসিক তাত্পর্য এবং অনন্য জলবায়ুর জন্য পরিচিত। এটি আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব উপকূল এবং আরব উপদ্বীপের মধ্যে প্রায় ২২৫০ কিলোমিটার (১৪০০ মাইল) প্রসারিত। লোহিত সাগরের দুপাশে মিশর, সুদান, ইরিত্রিয়া, জিবুতি, সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং জর্ডান সহ বেশ কয়েকটি দেশ রয়েছে।
ভৌগলিকভাবে, লোহিত সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধারণ করে কারণ এটি সুয়েজ খালের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরকে ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযুক্ত করে। এই কৌশলগত অবস্থান এটিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথে পরিণত করেছে, যা এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে কম খরচে পণ্য পরিবহনে অনেক সহজ করেছে। ইউরোপ ও আমেরিকাগামী পণ্যবাহী জাহাজ লোহিত সাগর চলাচল করে কেবল সময় ও খরচ এবং নিরাপত্তা বিবেচনায়। তাই লোহিত সাগর ও সুয়েজখাল দুটি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল বাণিজ্যিক গুরুত্বের দিক দিয়ে। সুয়েজখাল পার হবার জন্য প্রতিটি জাহাজকে মিশরকে নির্দিষ্ট অংকের কর দিতে হয়।
সূত্র : আল জাজিরা, এশিয়া শিপিং টাইমস, উইকিপিডিয়া।
আরও পড়ুন : পবিত্র শবে মেরাজ ৮ ফেব্রুয়ারি
বিএনএ, এসজিএন