26 C
আবহাওয়া
৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ - মে ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সায়াহ্নে সিলেট: ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী

সায়াহ্নে সিলেট: ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী

সায়াহ্নে সিলেট ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী

।। শাফি মাহবুব ।।

বিএনএ, নোবিপ্রবি: চারিদিকে থৈ থৈ পানি, সাথে নির্মল বাতাস আর আকাশে রূপালী মেঘ। এমন দারুণ পরিবেশেও ক্রমাগত কাঁপুনি দিয়ে ঘামছে রায়াত। গায়ে ডিপার্টমেন্ট থেকে বানানো সায়াহ্নে সিলেট এর টিশার্ট, তার ওপর হলুদ পলিথিন জড়িয়ে গুটিশুটি হয়ে আছে সে। কাঁপুনির সাথে সাথে ক্রমাগত দোয়া-ই ইউনূস পড়ে যাচ্ছে। এই বুঝি ডুবে মারা যাবে! শুনে মনে হতে পারে এ বুঝি ডুবন্ত টাইটানিকের কোনো যাত্রীর শেষ যাত্রার গল্প। তবে না, এটা টাইটানিকের কোনো যাত্রীর কথা নয়। সিলেট ভ্রমণে গিয়ে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে নৌকায় বসে ছোটবোন রায়াতের করা নানান কার্যকলাপের একটি মাত্র। আচ্ছা, তাহলে একদম শুরু থেকে শুরু করি।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতির রঙিন ক্যানভাসকে বর্ণিল রঙে রাঙিয়ে তুলতে ডিবিএ ১৬ তম ব্যাচের একটি ভ্রমণের পরিকল্পনা ছিল বহু আগে থেকেই। এরই সূত্র ধরে যোগাযোগ হয় রাকিব নামের ডিবিএ’র এক স্বপ্নবাজ তরুণের সাথে। সে জানালো তাদের ভ্রমনের ইচ্ছার কথা।

তারা যেতে চায় ওলি আউলিয়ার দেশ, দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ, চায়ের রাজধানী খ্যাত ঐতিহাসিক শ্রীহট্টে তথা সিলেটে। এরপর থেকেই প্ল্যান রেডি করা হতে, যাত্রার তারিখ ঠিক করা সবকিছুতেই কথা হতো রাকিবের সাথে।

এই ট্যুরে ডিবিএ ১৬ তম ব্যাচের কো অর্ডিনেটর হিসেবে আমাদের সাথে ছিলেন নোবিপ্রবি ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ কাইয়ুম। আমি ছিলাম ছুটি ট্যুরিজমের (ট্র্যাভেল এজেন্সি) নোবিপ্রবি’র এম্বাসেডর। ছুটি ট্যুরিজম কাজ করে শিক্ষার্থীদের অল্প খরচে সুন্দর- আনন্দদায়ক ভ্রমণ অর্গানাইজ করা নিয়ে।

প্রথম দিন
পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় যাত্রা শুরু হয় নোবিপ্রবি থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে। আট- ন ঘন্টার এই জার্নিতে কারো কোন ক্লান্তি আসেনি। সবাই ছিলো গান বাজনা, নাচানাচি নিয়ে ব্যস্ত। ৪০ জনের টিম নিয়ে রোববার (৮ অক্টোবর) ভোরে আমরা সিলেট পৌঁছাই। নেমেই হোটেলে চেক ইন দিয়ে নাস্তা সেরে পথ ধরলাম বাংলাদেশের সর্বপ্রথম চা বাগান মালনীছড়ার উদ্দেশ্যে। ১৮৭৫ সালে এই চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে নেমে পোলাপান মিশে যায় দুটি পাতা একটি কুড়ির কার্পেটে। অনিন্দ্য সুন্দর এই চা বাগানে ৪০ মিনিট কাটাই আমরা। সবাই ছবি তুলে, ভিডিও করে এর স্মৃতি নিজের সঙ্গে নিয়ে যায়। আমাদের এর পরের গন্তব্য পাহাড়ি কন্যা সাদাপাথরে। রাস্তার চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে সকাল সাড়ে ১০ টায় আমরা পৌঁছাই ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর।

সায়াহ্নে সিলেট ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী
নৌকায় ঘুরে বেড়ানো

সেখানে নামার সাথে সাথেই শুরু হয় বৃষ্টি। কিছুক্ষণ আগের পরিষ্কার ফকফকা আকাশ হঠাৎ করেই রূপ নেয় রুদ্রমূর্তিতে। ভয়ানক ঝড় শুরু হয়। এই বৃষ্টির মধ্যেই আমরা নৌকা ভাসাই জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। বড় বড় ৫ টি নৌকায় ৮ জন করে উঠি। ওই মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি ভয়ে ছিলাম আমি আর শোয়েব। কারণ, আমি আর শোয়েব এই ট্যুরের হোস্ট, আমাদের দুজনের ওপর পুরো ৪০ জনের দায়িত্ব। তাও সাহস আর আত্মবিশ্বাসের সাথে সবাইকে নিয়ে পাহাড়ি ঢলের মধ্যেও মেইন স্পটে পৌঁছাতে পেরেছি। স্পটে নেমে দেখি অবস্থা খুবই খারাপ। ভারতের উজান থেকে ক্রমাগত নেমে আসছে পাহাড়ি ঢল। সবসময় দেখে আসা শান্ত সাদাপাথর মূহুর্তেই রূপ নেয় এক আতংকে। স্থানীয়রা শুধু বলে যাচ্ছিলো ব্যাক করেন আপনারা, কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ডুবে যাবে। সবাইকে পানিতে না নামার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়ে দিই। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে সারাক্ষণ ছায়ার মত লেগেছিলাম প্রত্যেকের সাথে। কোনভাবেই কোন অঘটন ঘটতে দেওয়া যাবে না। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বৃষ্টির মধ্যে অত্যন্ত সাবধানে সাদাপাথরে অবস্থান করি আমরা। এরমধ্যেই সবাই গ্রুপ ছবি, নিজেদের ছবি ও ভিডিও করে নেয়। আমরা ফিরে আসি নৌকার ঘাটে। সেখানে আমরা দুপুরের খাবার খাই। দুপুরের খাবার পর্ব শেষে রওনা দিই রাতারগুলের উদ্দেশ্যে। রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র জলারবন।

মেঘলা আকাশ, চারিদিক পানিতে টইটম্বুর আর হু-হু বাতাস। অসাধারণ এই দৃশ্য নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা ভার। একটু পর পর দেখা মিলে অর্ধনিমজ্জিত সুবিশাল গাছের সারি। মাথার ওপর গাছের ডালপালাগুলো সবুজের দুর্ভেদ্য জাল তৈরি করে রেখেছে। তার মধ্য দিয়ে চলছে আমাদের নৌকা। রাতারগুলের এ অপরূপ দৃশ্য সচরাচর দেখা মেলা ভার। টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে এবার রাতারগুল এ মোহনীয় রূপ ধারণ করেছে বলে জানালেন আমাদের মাঝি ভাই। পুরো বিকেল আমরা সেখানে অবস্থা করি। যাত্রাপথের মাতাল হাওয়া, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর মাঝি ভাইয়ের গানের সাথে আমাদের গলা মেলানো- স্নিগ্ধ রাতারগুলের এ মূহুর্তগুলো যেন স্মৃতির ক্যানভাসে এক রংধনু হয়ে রয়ে গেল।

সন্ধ্যাবেলা সবাই হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। হোটেলে পৌঁছে সবাই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম করে। তারপর ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীরা হোটেলের লবিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শেষে সিলেটের বিখ্যাত পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে আমাদের রাতের খাবারপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরই মধ্য দিয়ে আমাদের ট্যুরের প্রথম দিন শেষ হয়।

দ্বিতীয় দিন
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ঘুম থেকে উঠার পরই দেখি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম আজকের দিনটা বোধহয় বৃষ্টিতেই পণ্ড হবে। কিন্তু না, কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টি থেমে যায়। সবাইকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় আমরা সকালের নাস্তা করি। বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি না হলে কি চলে! সকালে আমাদের নাস্তার আইটেম ছিলো ডিম খিচুড়ি। সবাই তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে বাসে উঠে। আজ আমাদের গন্তব্য ভারতের পাদদেশের জৈন্তাপুরের অনিন্দ্য সুন্দর ডিবির হাওর, জাফলং, খাসিয়া পল্লী এবং মায়াবী ঝর্ণা। আমরা ডিবির হাওর পৌঁছাই সকাল সাড়ে ১০ টায়। সেখানে একদিকে বিশাল হাওর অন্যদিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিশাল পাহাড় দেখে সব ক্লান্তি উড়ে যায়। প্রকৃতি নিজেই এখানে চিত্রশিল্পী, পাহাড় তাহার ক্যানভাস। ডিবির হাওরে ঘন্টাখানেক কাটিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করি জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে। জাফলংয়ের যত নিকটে যাচ্ছিলাম ততই মনে হচ্ছিল, এই বুঝি হাত বাড়ালেই পাহাড় ছুঁতে পারবো। কিন্তু গাড়ি এগোতে থাকলেও পাহাড়ের দূরত্ব যেন কমেই না। এসময় সঞ্জিবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পালামৌ’ ভ্রমণকাহিনীর সেই কথাটি মনে হলো- ‘পর্বত সমন্ধে দূরত্ব স্থির করা বাঙালির পক্ষে বড় কঠিন’।

সায়াহ্নে সিলেট ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী
পাহাড় দেখা

৪০ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌঁছে যাই জাফলং। সেখানে নেমে ভারতের ডাউকিকে সামনে রেখে সবাই ছবি তোলে। আমি আর শোয়েব এরই মধ্যে নৌকা ঠিক করি। চারটি বিশাল নৌকায় আমরা রওনা দিই জাফলং জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। স্বচ্ছ পানির বর্নিল ধারায় সবাই আনন্দ উল্লাসে যেন ফেটে পরে। সামনে ভারতের মেঘালয় রাজ্য। বিশাল বিশাল সব পাহাড়। পাহাড়ের মাঝ দিয়ে একে বেঁকে চলে গেছে সরু রাস্তা। সেখানে দুই পাহাড়ের সংযোগ ঘটিয়েছে ঝুলন্ত ‘ডাউকি’ ব্রিজ। তার উপর দিয়ে চলছে গাড়ি। এসব দেখে অর্পিতার মনে হচ্ছিল, ‘ইস্! যদি মেঘালয়ে ঘুরে আসতে পারতাম।’ ডাউকি যেতে না পারলেও নয়নাভিরাম এই প্রাকৃতির মাঝ দিয়ে এগিয়ে যেতে লাগল আমাদের নাও (সিলেটি ভাষায় নৌকাকে নাও বলে)। একটু পরেই আমরা আসলাম খাসিয়া পল্লিতে। খাসিয়াদের ৫ টি পুঞ্জিতে আমরা ঘুরে বেড়াই, তাদের জীবন জীবিকা স্বচক্ষে দেখি। তারপর যাই খাসিয়াদের চা বাগান দেখতে। চা বাগান দেখা শেষে সবাই খাসিয়াপল্লীর বাজার থেকে বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে। ১ ঘন্টার মত আমরা এই পুঞ্জিতে অবস্থান করি। তারপর ফিরে আসি নৌকায়। নৌকা এবার নদীতে ভাসে মায়াবী ঝর্নার উদ্দেশ্যে। কিছুদূর যেতেই হঠাৎ দূর থেকে ভেসে আসলো ঝর্ণার শব্দ। রোমাঞ্চ আর উত্তেজনায় সবার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। নৌকা থেকে নেমে দুই মিনিট হাঁটতেই দেখা মিললো মায়াবী ঝর্ণার। বর্ষার কারণে ঝর্ণায় প্রচুর পানি ছিল। আমার টিমের ৪০ জন গিয়েই পানিতে ছুটাছুটি শুরু করে। তবে এ ক্ষেত্রে রাকিব, নিলয়, রায়াত, অর্পিতা, মন্দিরা, রাফি, আজাদ, সিনথিতা এবং আরও কয়েকজন ভয়-ডরহীনভাবে পাথর বেয়ে ঝর্ণার উপরে উঠে গেলো। দেখে মনে হচ্ছিল যেন পাহাড়ি ঝর্ণার সাথে তাদের কত দিনের মিতালি। শুধু আমি আর শোয়েব একা একা দাঁড়িয়ে তাদের ব্যাগ পাহারা দিচ্ছিলাম আর সবাই ঠিকমত আছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখছিলাম। এরই মধ্যে আবার শুরু হলো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টি যেনো ঝর্ণার সৌন্দর্যকে কয়েক হাজার গুণ বাড়িয়ে দিল। বৃষ্টি, ঝর্ণা, মেঘ, বাতাস আর চারিদিকে পাহাড় সব মিলিয়ে যেন কল্পনার রাজ্যকে হার মানাবে জাফলংয়ের এই পরিবেশ।

বিকাল সাড়ে ৫ টার পর আমরা ফিরে আসার জন্য নৌকায় উঠলাম। নৌকা থেকে নেমেই খাবার খেলাম সবাই। খাবার পর্ব শেষে বিভিন্ন দোকান থেকে সবাই টুকটাক কেনাকাটা করল। রাতের বেলার ডাউকি আমি আগে কখনোই দেখিনি। স্বচক্ষে আলো ঝলমলে ডাউকি দেখে আমার মত সবাই যেন নিজেকে হারিয়ে ফেললো কল্পনার রাজ্যে। এতসব স্মৃতি বুক পকেটে নিয়ে আমরা বাসে উঠলাম। দূর থেকে পাহাড়ের বুক চিরে বেরিয়ে আসা ঝর্ণা দেখতে দেখতে আমরা শহরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। রাত ৮ টায় আমরা সরাসরি চলে যাই হযরত শাহজালাল ইয়েমেনী (রহ) এর মাজারে। সেখানকার এত এত জালালী কবুতর আর বড় বড় গজার মাছ, যা সত্যিই অবাক করার মত। অনেকেই মাজার জিয়ারত করে নেয়। ৯ টায় আমরা আবার বাসে উঠি হোটেলে উদ্দেশ্যে। হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ-পত্র নিয়ে আমরা চেক আউট দিয়ে বের হয়ে যাই। বের হয়ে সবাইকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে নিই। খাবার খেয়ে আমরা সবাই আবার বাসে উঠি। শোয়েব বিদায় নেয় আমাদের মধ্য থেকে। সব স্মৃতি সঙ্গ করে রাত ১১ টায় আমরা নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। ফিরতি পথে সবাই ছিলো ব্যথিত। পূণ্যভূমি সিলেট যে কাউকেই ফেরত যেতে দিতে চায় না। বারবার হাতছানি ফিয়ে ডাকে তার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। পরদিন ভোরবেলা আমরা সবাই সুস্থভাবে নোয়াখালী পৌঁছাই। ছুটি ট্যুরিজমের পক্ষ থেকে আমি এবং শোয়েব সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গিয়েছি সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য।

সায়াহ্নে সিলেট ভ্রমণে এক ঝাঁক শিক্ষার্থী
নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা

ডিবিএ ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অর্পিতা সাহা বলেন, ‘সিলেট আমার স্বপ্নের শহর। বেঁচে থাকলে কারণে অকারণে বারবার ছুটে যাব সিলেটের অপরূপ সুধা পান করতে। পাহাড়ের প্রেমে যে একবার পড়ে তাকে সে নেশা থেকে টেনে ছাড়ানো দায়। আমারও হয়েছে সেই অবস্থা। গিয়েছিলাম উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগানে যার নাম মালনিছড়া চা বাগান। অত‍্যন্ত মনমুগ্ধকর এই সবুজে ঘেরা চা বাগান আমাকে প্রাণবন্ত করে দেয়। এছাড়াও জাফলং, ডিবির হাওর, মায়াবী ঝর্ণা আমাকে মুগ্ধ করে। আবার ফিরে আসতে চাই এই সবুজ প্রাঙ্গণে।

মন্দিরা চক্রবর্তী নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্কুলের সময় থেকে ইচ্ছা ছিলো ভার্সিটি উঠে ট্যুর দিবো। আর জীবনের প্রথম ট্যুর এত্ত সুন্দর হবে ভাবিনি। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য আসলে বর্ণনাতীত। আর এই সুন্দর ট্যুর উপহার দেওয়ায় যাদের কথা না বললেই নয়, তারা হচ্ছেন ছুটি ট্যুরিজমের শাফি ভাইয়া এবং শোয়েব ভাইয়া। যখন যেভাবে সাহায্য চেয়েছি করেছেন। কোন কিছুতেই কার্পণ্য করেননি। আমাদের সব আবদার হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন তারা। এমনকি লিস্টের বাহিরের স্পটও ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। চেয়েছেন সর্বোচ্চটা দিয়ে সিলেটকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের। স্মৃতিতে সবুজ থাকবেন আপনারা।’

মোহাম্মদ রাকিব হোসাইন বলেন, ‘সাদা পাথরে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলেও আমরা যথেষ্ট মজা করেছি, সাদা পাথর থেকে মেঘালয়ের পাহাড়গুলোর ভিউ মুগ্ধ করেছে। তবে সবচাইতে ভালো লাগার স্পট রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। সেখানে নৌকায় মাঝি মামাদের গান এ যেন এক অন্য রকমের সেরা স্মৃতি। ডিবির হাওরের প্রকৃতি আর জাফলং জিরো পয়েন্টের ঝুলন্ত ব্রিজের দৃশ্যটা সুন্দর ছিল। তবে খাঁসিয়াপুঞ্জির পান সুপারি বাগান ইউনিক ছিল। মায়াবী ঝর্ণা সত্যিই মায়ায় ফেলে দিয়েছে। অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল পুরো ট্যুরটা। তবে বেশি খারাপ লাগছে এখন চলে এসে। আমরা চলে এসেছি কিন্তু মন যেন এখনো সিলেটেই।’

বিএনএনিউজ/বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ