36 C
আবহাওয়া
৪:৪৩ অপরাহ্ণ - মে ১৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পটিয়ার কিশোর গ্যাং লিডার আবছার জেলহাজতে

পটিয়ার কিশোর গ্যাং লিডার আবছার জেলহাজতে

পটিয়ার কিশোর গ্যাং লিডার আবছার জেলহাজতে

বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পটিয়ার কিশোর গ্যাং লিডার নুরুল আবছারকে (৩৮) জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক মো. গোলাম সারোয়ার তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আসামি আবছার উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা গ্রামের আবদুল ছবুরের ছেলে।

সে হিলচিয়া হাতিয়ারঘোনা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, চুরি, গুলি,অগ্নিসংযোগ, দান বাক্সের টাকা চুরিসহ একাধিক ঘটনার মূল হোতা।তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০-১৫ টি মামলা বিচারাধীন আছে।

সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট তার নেতৃত্বে হিলচিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের উপর নির্বিচারে গুলি করা হয়। এতে ১২-১৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে। এই ঘটনায় মো. সুমন বাদী হয়ে আবছারসহ ২২ জনকে আসামি করে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

কিশোর গ্যাং লিডার আবছারের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি দল গত ২ জুন মো. সাকিব নামে একজনকে গুলি করে গুরুতর আহত করে। এই ঘটনায়ও হাতিয়ারঘোনা গ্রামের মৃত ফারুক আহমদ খানের ছেলে বাহাদুর ইসলাম খান (৪০) বাদী হয়ে নুরুল আবছারকে ১নং আসামি করে মোট আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন: থামছেনা হৃদয়ের মায়ের আহাজারি: গণপিটুনীতে আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

গত বছরের এপ্রিলে হিলচিয়া গ্রামের জফিকুল ইসলাম নামে একজনকেও একইভাবে সন্ত্রাসী আবছারের নেতৃত্বে গুলি করে আহত করে। ঐ ঘটনায় সন্ত্রাসী আবছার প্রায় আড়াই মাস জেল হাজতে ছিল।

স্থানীয় ও একাধিক লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নুরুল আবছারের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কিশোর গ্যাং লিডার নুরুল আবছারের দলে রয়েছে হিলচিয়া গ্রামের মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. মনসুর, মৃত মোসলেম মিয়ার ছেলে নেজাম উদ্দিন, আফজল মিয়ার ছেলে মো. হেলাল, মৃত সাছি মিয়ার ছেলে আবু তৈয়ব, মৃত মোসলেম মিয়ার ছেলে মো. মহসিন, আবুল কাশেমের ছেলে সরু মিয়া, আবদুল মালেকের ছেলে আবদুল জব্বার (এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত), মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সাজ্জাদসহ ১০-১২ জন কিশোর।

তাদের নেতৃত্বে এলাকায় প্রতিনিয়ত মারামারি হানাহানি লেগে আছে। বিভিন্ন অলিগলিতে এদের দেখা মিলছে। তারা দিনরাত নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মদ, গাঁজা ও ইয়াবা সেবন এবং বিকিকিনিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত। সুযোগ বুঝে সিএনজিচালিত গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ও পথচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া। রাতের বেলা সারারাত জেগে থেকে মানুষের গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী, কবুতর, কলা, পেঁপে ইত্যাদি গাছের ফলফলাদি ও পুকুর থেকে মাছ চুরি করা, মানুষের গাছগাছালি কেটে নিয়ে যাওয়া তাদের পেশা ও নেশা।

কখনো স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। বেবি আকতার এ্যানি নামের একজন স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টাকালে বাধা দেওয়ায় মাসহ ঐ ছাত্রীকে কুপিয়ে আহত করে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। তারা কখনো এলাকায় জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে টাকার বিনিময়ে কোনো এক পক্ষের হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নেয়। এ সবই এই কিশোর গ্যাংয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ড। তাদের হাতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ লাঞ্চিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২১৪ (ফরিদপুর-৪)

গত ১০ এপ্রিল মামলার সাক্ষী আমির হোসেন, ২০ এপ্রিল রিক্সাচালক মো. জামাল ও তার স্ত্রী, ৫ মে আবু নাসের শিমুলসহ ৩ জন, ২৩ মে খোরশেদসহ ৮ জন, ২৬ মে ইমরান, ২৭ মে নজির আহমদ, ৬ জুন সিএনজি চালক আবু তালেবকে কিশোর গ্যাং লিডার আবছারের নেতৃত্বে ধাওয়া করলে ভয়ে হ্রদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ১২ জুন হাতিয়ারঘোনা গ্রামের আবদুল মুবিনের পিকআপ ভাংচুর করে। ২২ জুন আদালতে তাদের দলের ৫ সদস্য আটক হলে পরের দিন ২৩ জুন ক্ষিপ্ত হয়ে ইদ্রিচ আলী, তার স্ত্রী, বোনসহ ৪ জনের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। তাদের বাড়ি ঘর থেকে বের করে দিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

মামলার বাদী বাহাদুর ইসলাম খান বলেন, মূলহোতা আবছারকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। তার দলের আরও ৮-১০ জনকে গ্রেপ্তার করার পর এলাকায় শান্তি আসবে। না হয় যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মহানগর পিপি এডভোকেট আবদুর রশীদ বলেন, মামলার মূল আসামি নুরুল আবছারের জামিন আবেদন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।

বিএনএনিউজ/বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ