বিএনএ বিশ্বডেস্ক:যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান করেনি তালেবান। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর শনিবার আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়া তালেবানের ঘোষিত দেশটির নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেয়ার খবর এসেছিলো।
টুইট বার্তায় ইনামুল্লাহ সামানগানি বলেন, ‘নতুন আফগান সরকারের শপথ অনুষ্ঠান কিছুদিন আগেই বাতিল করা হয়েছিলো। জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হন, তাই ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তানের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রিসভার কিছু অংশের ঘোষণা দেন এবং ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।’
১১ সেপ্টেম্বর সরকারের শপথ নিতে যাওয়ার বিষয়টিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করে টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এর কোনো ভিত্তি নেই।
এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিলো, ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের আয়োজন করছে তালেবান। শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তুরস্ক, ইরান, কাতার, পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে রাশিয়া শপথ অনুষ্ঠানে না থাকার ঘোষণা দেয়।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ হামলার জন্য আফগানিস্তানে আশ্রয়ে থাকা আলকায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করেন। ওই সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের কাছে ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়ার দাবি জানান বুশ।
তালেবান সরকার ওসামা বিন লাদেনকে তুলে দেয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে মার্কিনিদের কাছে প্রমাণ চায়। প্রমাণ ছাড়া তারা ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
বুশ প্রশাসন ও তালেবানের মধ্যে বিরোধের জেরে ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে মার্কিন বাহিনী। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন সৈন্যদের হামলায় তালেবান সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবে একটানা দুই দশক যুদ্ধ চলতে থাকে দেশটিতে।এরই মধ্যে আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের সদস্য দেশগুলোও যুক্ত হয়। মার্কিনিদের সমর্থনে নতুন প্রশাসন ও সরকার ব্যবস্থা গড়ে উঠে দেশটিতে।
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ডেডলাইন থাকলেও ৩০ আগস্ট সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়।
বিএনএ/ ওজি