29 C
আবহাওয়া
১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ - আগস্ট ১৩, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » বিএনপিকে হুমকি দিলেন সারজিস?

বিএনপিকে হুমকি দিলেন সারজিস?


বিএনএ, ডেস্ক : গ্লোবাল টেলিভিশনের একটি টকশো’তে গত রোববার স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার এবং তাদের সন্তানদের সমালোচনা করেন ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপি’র উত্তরাঞ্চল মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

গত সোমবার এক প্রতিক্রয়ায় নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুকে তিনি লিখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান গতকাল একটা অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলামসহ এনসিপি’র অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নিজের ফ্রেমিংয়ে ফেলে ‘বেজন্মা’ গালি দিয়েছেন। এই আওয়ামী লীগার ও মুজিববাদী এখন বিএনপি’র ন্যারেটর এন্ড ওরেটর। ফজলুর মতো বিএনপি নেতা গত কয়েক মাস ধরে গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগের হয়ে মাঠে সরব থাকছে। যে ভাষা ও বয়ানে সে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করছে, সে ভাষা ও বয়ান পুরাপুরি খুনি লীগের এবং তার বয়ান খুনি লীগের মিডিয়া সেলগুলোই হরদম প্রচার করে যাচ্ছে।

সিনিয়র রাজনীতিবিদদের আমরা সম্মান করতে চাই। কিন্তু জনাব ফজলুর মতো পলিটিক্সে ন্যূনতম আদবের তোয়াক্কা না করা, ইনিয়ে বিনিয়ে ফ্যাসিবাদের দালালি করা, অভ্যুত্থানকে মেনে নিতে না পারা, আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের দায় তাদেরকেই নিতে হবে।

পাল থেকে ছুটে যাওয়া লাগাম ছাড়া কয়েকজনের জন্য বিএনপি বারবার নিজেদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দেখতে চায় কিনা সেই সিদ্ধান্ত বিএনপির নিতে হবে। এদের স্টেটমেন্ট এবং এদের বিরুদ্ধে যদি আপনারা ব্যবস্থা না নেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করবে তাদেরকে দিয়ে আপনারাই এই কথাগুলো বলাচ্ছেন।

অথচ এক সময় এই সারজিস আলম নিজেই ‘আমার বঙ্গবন্ধু’, ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ বলে মুখে ফেনা তুলেছিলেন।

সময়ের পরিক্রমায় সারজিস আলম এখন বঙ্গবন্ধুকে সম্মান দেয়া দূরে থাক ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্বীকার করেছেন তাই নয়-কেউ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রাজাকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তার প্রতিবাদ করে এবং হুংকার করার দৃষ্টতা দেখায়। ফিরে যেতে চায়, ১৯৪৭ সালে। কেন নাহিদ- সারজিস-হাসনাতরা ফিরে যেতে চায় এমন প্রশ্ন রয়েছে জনমনে?

কী আছে আছে ১৯৪৭ সালে? সেই বিশ্লেষণে যেতে হলে ফিরে যেতে হবে লাহোর প্রস্তাব, যা পাকিস্তান প্রস্তাব নামেও পরিচিত। ১৯৪০ সালের ২৩শে মার্চ  পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত  নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সম্মেলন। সেই সম্মেলনে পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিকান্দার হায়াত লেখা ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী   শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ।

‘দ্বি-জাতি তত্ত্ব’ নামে খ্যাত এই প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা। মুসলিম লীগ মনে করত যে, হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি থাকা দরকার, যেখানে তারা নিজেদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে পারবে।

লাহোর প্রস্তাবে বলা হয়েছিল যে, ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোকে নিয়ে “স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ” গঠন করতে হবে। এই রাষ্ট্রগুলো হবে সার্বভৌম ও স্বায়ত্তশাসিত।

লাহোর প্রস্তাব ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই প্রস্তাবের মাধ্যমেই মুসলিম লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তান রাষ্ট্রের ধারণা আরও সুসংহত হয় এই প্রস্তাবের  এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে, শান্তিপূর্ণভাবে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে।

ধর্মের ভিত্তিতে দু’টি রাষ্ট্রের জন্ম ছাড়া ইতিহাসে ১৯৪৭ সালে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাওয়া যায় না, যা ২৪ পরবর্তীতে একটি রাজনৈতিক দলের আর্দশ উদ্দেশ্য হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের ছায়া লালিত-পালিত জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের মেধার সীমাবদ্ধতা এবং রাজনৈতিক দর্শনের অভাবে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত এবং দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত” ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর পাকিস্তানকে স্থান দিয়ে জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা রাজনৈতিক রসিকতা ছাড়া কিছুই নয়।

বিএনএ/সৈয়দ সাকিব

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ