বিএনএ, কক্সবাজার : কক্সবাজারের পেকুয়া বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম (৭০) বার্ধক্যের কারণে বুধবার দিবাগত রাত একটায় মারা যান। নুরুল ইসলামের মরদেহ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ছেলে জাহেদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হয়। তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বেলা দুইটায় বাবার জানাজায় অংশ নেয় জাহেদুল।
নুরুল ইসলামের তিন ছেলে, তিন মেয়ে। এর মধ্যে জাহেদুল ইসলাম পাঁচ নম্বর সন্তান। চলতি দাখিল পরীক্ষায় জাহেদুল ফাঁসিয়াখালী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার পরীক্ষার কেন্দ্র পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায়।
জাহেদুলের প্রতিবেশী আসহাব উদ্দিন বলেন, জাহেদুল পড়াশোনায় খুব মনোযোগী। পরীক্ষা চলাকালীন তার বাবার মৃত্যুতে সে হতভম্ব হয়ে পড়েছে। এরপরও সে পরীক্ষা দিতে মনস্থির করেন। এ কারণে জানাজা পরীক্ষার পরে দেওয়া হয়। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে বেলা একটায় শেষ হয়। বেলা দুইটায় তার বাবার জানাজা হয়।
এবিষয়ে জাহেদুল জানান, বাবার মৃত্যুতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। তবে একটি পরীক্ষা না নিলে ফল অকৃতকার্য হবে। এ জন্য বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে যাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, অনেকে জাহেদুলকে পরীক্ষা না দিতে বলেছিলেন। আবার অনেকে সকাল ১০টায় জানাজা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জাহেদুলের সংকল্পের কাছে সবাই হেরে গেছেন। একপর্যায়ে জাহেদুলের পরীক্ষার পরেই তার বাবার জানাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বেলা দুইটায় বারবাকিয়ার ভারুয়াখালী জামে মসজিদের মাঠে নুরুল ইসলামের জানাজা হয়। পরে ভারুয়াখালী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এবিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান , জাহেদুল ভালো ছাত্র। তার বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এটি খুবই ইতিবাচক খবর। পড়াশোনার প্রতি তার মনযোগ ও একাগ্রতা বহুদূর নিয়ে যাবে। জাহেদুলের বাবার মৃত্যুতেও আমরাও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
বিএনএনিউজ/ শাহিন/এইচ.এম।