বিএনএ, কুবি : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে (কুবি) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি অনুমোধিত সংগঠন রুম বরাদ্দ দিলেও দেওয়া হয়নি কোন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। এছাড়া নেই নিরাপত্তা ও শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম। উদ্বোধনের ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এসব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বশীলরা।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, গেল বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ টি অনুমোধিত সংগঠনকে ক্যাফেটেরিয়ার ২য় তলায় আলাদা কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৫টি রুমের উল্লেখ থাকলেও জিমনেশিয়াম ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগ কমনস্পেসটিসহ দখল করে আছে দুইটি রুম। যার ফলে রুম বরাদ্দ পায়নি ৪টি সংগঠন। রুম বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্রতিটি রুমের উপর অংশ ফাকাঁ রাখা হয়। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। প্রদান করা হয়নি কোন আসবাবপত্র।
সংগঠনগুলোর কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন প্রতিবর্তন ও বন্ধু মেঝেতে কার্পেট বিছিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া থিয়েটার ও ডিবেটিং সোসাইটি নিজেদের উদ্যােগে কিছু চেয়ার টেবিল সংগ্রহ করেছে। রুমের উপরের অংশ ফাকাঁ থাকায় তীব্র শব্দ দূষণের সৃষ্টি হয়। যার ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
বরাদ্দকৃত রুমের উপরের অংশে ফাকাঁর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক এস.এম.শহিদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের যেমন নকশা দিয়েছেন আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি।
কমনস্পেস দখল করে রাখার বিষয়ে জিমনেশিয়ামের তত্ত্বাবধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বরাদ্দকৃত রুমগুলো ছোট হওয়ায় জিমনেশিয়ামের যন্ত্রপাতি রাখা সম্ভব হয়না। কমনস্পেসটি ব্যবহার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
এদিকে সংগঠনের বিভিন্ন সমস্যা বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বশীলরা বলেন, বরাদ্দকৃত রুমের পরিসর খুবই ছোট। এছাড়া প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র না থাকায় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো এবিষয়ে কোন উদ্যোগ নেয়নি।
ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি দীপ্ত দাস বলেন, ডিবেট করার মতো কোন পরিবেশই নেই রুমে। এখানে কোন নিরাপত্তা নেই। প্রতিটি সংগঠনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, বই, ট্রফি থাকে। কিন্তু রুমের উপরের অংশ ফাকাঁ থাকায় আমরা কোনভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছিনা।
প্রতিবর্তনের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হোসেন বলেন, সংগঠনের জন্য রুমগুলো অপরিকল্পিত ভাবে রুমগুলো ছোট করে তৈরি করা হয়েছে। কমনস্পেসটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা থাকলেও জিমনেশিয়ামের যন্ত্রপাতি দিয়ে রুমটা দখল করে আছে। কমনস্পেসটি খোলা রাখা হলে কাজ করা সম্ভব হত।
ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান বলেন, সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করে। সংগঠনগুলো রুম বরাদ্দ পেলেও কিছু সমস্যা রয়েছে।আমি আবারও কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, বরাদ্দকৃত রুমগুলোতে নকশা অনুযায়ী উপরের অংশ ফাকাঁ থাকে। ফাকাঁ অংশ পূরণ ও সংগঠনগুলো প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের জন্য বাজেট দিতে প্রকৌশল দপ্তরকে বলা হয়েছিল। আমি বিষয়টি কোন পর্যায়ে আছে খোজঁ নিয়ে দেখব। নতুন উপাচার্যের সাথে বসে দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা করব। কমনস্পেসে জিমনেশিয়ামের যন্ত্রপাতির বিষয়ে বলেন, এ খোলা অংশটি সবার জন্য রাখা হয়েছে। এখানে কিভাবে জিমনেশিয়ামের যন্ত্রপাতি আসলো আমি বিষয়টি জানবো। এগুলো সরিয়ে নিতে বলব।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, এই বিষয়ে কি কি সিদ্ধান্ত হয়েছে আমার জানা নেই। রোববার অফিসে গিয়ে কথা বলব।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.এফ.এম আবদুল মঈনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকেঁ পাওয়া যায়নি।
বিএনএ/ হাবিবুর রহমান হাবিব, ওজি