ঢাকা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ) বলেছেন, সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্কাবস্থায় আছে। বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ভারত।
উপদেষ্টা রবিবার(১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবির ও স্থানীয় মানুষের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সেসব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিজিবির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদ করায় উপদেষ্টা সীমান্তবর্তী জেলার অধিবাসীদের ধন্যবাদ জানান।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ) বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর সাথে বিজিবির পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। তারা কূটনৈতিকভাবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক হবে বলেও উপদেষ্টা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, সীমানা নির্ধারণ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট চারটি চুক্তি আছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলী-১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্য লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা সম্বলিত যেকোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া, উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্য লাইন হতে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে-অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪ হাজার ১৫৬ কি. মি. সীমান্তের মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কি. মি. স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কি.মি. স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান।
সাংবাদিককদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে আমাদের প্রচুর শক্তি রয়েছে। বিজিবির সাথে জনগণও কঠোরভাবে প্রতিহত করছে। কোনো বিরূপ ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় হাইকমিশনকে বিষয়টি জানানো হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বিপিএম ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনএ,এসজিএন