27 C
আবহাওয়া
১০:২৯ পূর্বাহ্ণ - আগস্ট ১৩, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » জাতীয় পার্টির ‘শেষ খেলা’ কার সঙ্গে?

জাতীয় পার্টির ‘শেষ খেলা’ কার সঙ্গে?


বিএনএ ডেস্ক :জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা থাকা অবস্থায় ১৯৮৬ সালের পহেলা জানুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় পার্টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি ২০২৫ সালের আগষ্ট পর্যন্ত ৫ টুকরা হয়েছে। যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অনন্য রেকর্ড!

গত বছরের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন সেনা প্রধানের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে জাতীয় পার্টি অংশ নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবদিয়েছিল। কিন্তু ৮ই আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে রাষ্ট্রীয় কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পায়নি দলটি নেতারা। সাংগঠনিক তৎপরতা থেকে দূরে থাকে জাতীয় পার্টি।

এই অবস্থায় গত বছরের ২ নভেম্বর জাতীয় পার্টি তাদের বিজয় নগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সভার আয়োজন করে। সে কারণে ৩১ শে অক্টোবর একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে। এই সভাকে কেন্দ্র করে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের প্রতিবাদে’ মশালমিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।

ওই মিছিলে অংশ নিয়েছিল সারজিস-হাসনাতের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙ্চুর ও অগ্নি সংযোগ করে। শুধু তাই নয়- লিখে দেয় ‘জাতীয় টয়লেট’। তখন থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি ফ্যাসিবাদের দোসর ও গৃহপালিত বিরোধী দলের তমকা পাওয়া জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক তৎপরতা ।

হঠাৎ করে গত ৭ জুলাই জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, শামীম হায়দার পাটোয়ারিকে দলের মহাসচিব ঘোষণা করে। দলের জ্যেষ্ঠ তিন নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হককে (চুন্নু) দলীয় সব পদ-পদবী থেকে অব্যাহতি দেয়। অব্যাহতি প্রাপ্তরাই গত ৯ জুলাই কাউন্সিলের ডাক দেয়। সেই কাউন্সিলটি যেন হয়ে ওঠেছিল অন্তর্বর্তী সরকার ও সরকারি দল এনসিপির সমালোচনা্র একটি “প্ল্যাটফর্ম” ।

জিএম কাদের ও শামীম হায়দার ছাড়া অনুষ্ঠিত ওই কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

তিনি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এখন সংস্কারের জন্য বিদেশ থেকে লোক ভাড়া করে আনতে হয়। তারা কিভাবে সংস্কার করবে। তারা সংস্কারের প্রস্তাবনা দিতে পারে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সংসদ লাগবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের এক সময়কার বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আরও বলেন নির্বাচনের কথা উঠছে। কিন্তু কিভাবে নির্বাচন হবে, আদৌ নির্বাচন হবে কিনা- জানি না। তাছাড়া দেশে এখন যে পরিবেশ বিরাজ করছে, তাতে নির্বাচন কি দরকার? বড় দুই দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে নিলে নির্বাচনের খরচ বাবদ দুই হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে বলে মন্তব্য করেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।’

কাদের বিরোধী কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এক কাঠি সরেস। ড. ইউনূস সরকারের সময় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা মনে করেছিলাম, একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। কিন্তু উল্টো হয়েছে। দেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ থেকে এখন ৩ শতাংশে নেমেছে। আপনারা বলছেন, চুরি বন্ধ করেছেন, বিদেশে টাকা যাওয়া বন্ধ করেছেন। তাহলে প্রবৃদ্ধি কমল কেন’ ? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনের দীর্ঘ এক বছর পর জাতীয় পার্টি বাঘের গর্জন দেখালো কেন? তাদের এই গর্জনের উৎস কী? যখন পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন ছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণ না করা এবং আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত ইসলামী, হেফাজত ইসলামী ও চরমোনাইপীরের দল—তখনি কোমর বেঁধে রাজনীতির মাঠে নেমেছে জাতীয় পার্টি। রাজনীতির কোন সমিকরণে কার সঙ্গে ‘শেষ খেলা’ খেলতে চায়— জাতীয় পার্টি? কোন দল বা কোন শক্তির ‘ট্রামকার্ড’ জাতীয় পার্টি? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে দেশবাসীকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

সৈয়দ সাকিব

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ