বিএনএ, নেত্রকোণা : নেত্রকোণার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালটি নিজেই চরম দুর্দশায়। উনিশ শয্যার ভবনে চলছে পঞ্চাশ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধাদি ও উপযুক্ত জনবলের ঘাটতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন রোগী-চিকিৎসক সবাই।
জানা যায়, ১৯৭৫ সালে একটি দ্বিতল ভবনে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে ১৯ শয্যা বিশিষ্ট অপর একটি ত্রি-তল ভবন নির্মাণ ও হাসপাতালটিকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে।
এ দিকে, বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়া, রড বেরিয়ে আসা ও ফাটলের কারণে মূল ভবনটির ব্যবহার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে, ১৯শয্যা-উপযোগী নতুন ভবনেই চলছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। অনেক সময় শয্যা ছাড়িয়ে মেঝে ও বারান্দাতেও রোগীদের স্থান সংকুলান হয় না। আবার, স্থান সংকুলান না হওয়ায় সেই ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবনেই জরুরী বিভাগ চালু রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে চিকিৎসকের ৩০টি পদের বিপরীতে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৯জন । ১০টি পদের বিপরীতে ২জন কনসালটেন্ট কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে আবার এনেসথেসিয়া বিভাগের কনসাল্টেন্টকে এটাচম্যান্টে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। হাসপাতালের টেকনোলজিস্টের পদ সংখ্যা ৬টি। আছেন দু’জন। স্টোরকিপার নেই। একজন স্বাস্থ্য সহকারী পরিসংখ্যান বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশান হয় না। ফলে প্রসূতি মায়েদের ঝুঁকি নিয়ে নেত্রকোণা জেলা সদরে যেতে হয়। মদন থেকে জেলাসদরের দূরত্ব ৩৫কিলোমিটারের বেশী।
হাসপাতালে ভর্তি কয়েকজন রোগী বলেন, ডাক্তাররা ঠিকমত খোঁজ-খবর নেয় না, নার্সদের ডাকলে রাগারাগি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের ব্যবস্থা বাইরে থেকে করতে হয়। খাবারের মান ভাল না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ নুরুল হুদা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জনবল ঘাটতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। পুরাতন ভবনের অবস্থা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সিজারিয়ান অপারেশন চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জনবলের ঘাটতি শীঘ্রই পূরণ হবে। হাসপাতাল ভবন সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
বিএনএ/ফেরদৌস আহমাদ বাবুল,ওজি