বিএনএ, কক্সবাজার : রোহিঙ্গাদের কারণে মাদকের সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ সারাদেশ। দিন দিন তাদের মাদক ব্যবসায় জড়ানোর প্রবণতাও বেড়েছে। জনপ্রতিনিধিদের দাবি, মাদক পরিবহন ও নিয়ন্ত্রণ অনেকটায় রোহিঙ্গাদের হাতে। দুই দেশের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও এদের নিয়ন্ত্রণে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের অনেক জায়গায় রয়েছে জল, স্থল ও দুর্গম পাহাড়ি পথ। এ পথ ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে মাদক। পাচারকাজে জড়িত রোহিঙ্গারা। যাদের মধ্যে অনেকেই মাদকসহ আটক হচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে। সীমান্ত পেরিয়ে মাদক ঢুকে পড়ছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় শিবিরগুলোতে। যা পরবর্তীতে পাচার করা হচ্ছে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে।
কক্সবাজার উখিয়া থানার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দীন চৌধুরীর দাবি, পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে মাদক পাচার করছে মিয়ানমার।
কক্সবাজার উখিয়া থানার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে তারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এখন তাদের মাধ্যমেই পুরো বাংলাদেশে ইয়াবা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে
টাকার জন্য রোহিঙ্গারা মাদক পাচারে বেশি জড়িয়ে পড়ছে বলে জানালেন রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতারা।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘এরা টাকার জন্য, নিত্যদিনের খরচের পয়সা জোগাতে এসব মাদক বহন করছে তা নয়।বরং রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী পুরুষ।
এ বিষয়ে কক্সবাজার ৮ এপিবিএন অধিনায়ক মো. আমির জাফর বলেন, ‘আমরা পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করছি, আইনের আওতায় আনছি, কিন্তু রোহিঙ্গারা দিনকে দিন প্রবল সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারা এসব মাদক সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।’
গেল ৫ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মামলা হয়েছে আড়াই হাজার। যার মধ্যে শুধু মাদক উদ্ধার মামলা হয়েছে ১ হাজার ৭ শতাধিক।
গেল ৩ বছরে বিজিবির জব্দ করা ইয়াবা ও আইসের পরিসংখ্যান:
২০১৯ সালে জব্দ ৭৫,৫৯,২০০ পিস ইয়াবা
২০২০ সালে জব্দ ১,০৪,১৬,৩২০ পিস ইয়াবা
২০২১ সালে জব্দ ১,৬২,৬৬,১৫১ পিস ইয়াবা ও আইস সাড়ে ১২ কেজি
২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত জব্দ ৭৬,০১,০২৫ পিস ইয়াবা ও আইস ৪৬ কেজি।
উদ্ধার করা এসব ইয়াবা ও আইস প্রতিবছর আনুষ্ঠানিক ভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, আগে রোহিঙ্গারা স্থানীয় মিডিয়া ব্যবহার করে ঢাকা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার শহরে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক বিক্রি করতো।এখন রোহিঙ্গাদের চলাচলে অবাধ সুযোগ থাকায় লাইন ঘাট এখন সবই তাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। মাদকদ্রব্য পাচার ছাড়া ও নানা অপরাধ কর্মকান্ডে ও জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা।
বিএনএনিউজ/এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন/এইচ.এম।