বিএনএ, ঢাকা: দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মত দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার দ্বিতীয় ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।
তাই নির্বাচন কমিশন (ইসি)আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আয়োজন করেছে।
রোববার(১২ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
নতুন রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন?
এ নিয়ে বছর ব্যাপি নানা আলাপ-আলোচনা শোনা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র শেষ মুহুর্তে নিশ্চিত করেছে নাটকীয় কোনো পরিবর্তন না হলে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হতে পারেন ড. মশিউর রহমান। এ জন্য বহু আগেই তিনি গ্রীণ সিগনাল পেয়েছেন,আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন, বিশ্বস্ত একজন ব্যক্তি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর কর্মজীবনের সততা এবং বুদ্ধিদীপ্ততা নিয়ে কোন রকম সংশয় নেই। তিনি সব সময়ই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছেন।
জ্ঞানী এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একজন মেধাবী হিসেবে পরিচিত ড. মশিউর রহমান বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। অর্থনীতির উপর অগাধ পাণ্ডিত্য রয়েছে।
মশিউর রহমানকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে বিবেচনার অনেকগুলো যৌক্তিক কারণ আছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। ড. মশিউর রহমান একজন কৃতি আমলা। ১৯৬৫ সালে সিএসপি হিসেবে তিনি সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছিলেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।
পচাঁত্তরের পরবর্তী সময়ে সরকারি চাকরিতে থাকলেও নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে তাকে সময় অতিবাহিত করতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।
ড. মশিউর রহমান ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ইআরডি সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করলেও মশিউর রহমানকে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধী গ্রামের এই কৃতী সন্তান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেকর্ডসংখ্যক মার্ক নিয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। শুধু একাডেমিক পরীক্ষা নয়, সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায়ও সমগ্র পাকিস্তানে নিজেকে গৌরবোজ্জ্বল স্থানে নিয়ে যান ড. মসিউর রহমান।
তিনি ১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য তাঁর কর্মজীবনকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাষ্ট্রপতি পদে একজন প্রার্থী হলে, নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হবে না।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা জানা যাবে রোববার(১২ ফেব্রুয়ারি)। এদিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
তবে ড. মসিউর রহমান নাকি অন্য কেউ নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন তা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই ভাল বলতে পারবেন। তার ওপরই শতভাগ নির্ভর করছে কে হবেন নতুন রাষ্ট্রপতি। এখন পর্যন্ত এ পদে আলোচনায় আরও রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দিনাজপুরের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের নাম। শেষের ২জন ছয়বার করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত এবং সাবেক মন্ত্রীও।
bnanews24, হাফিজ, জিএন