বিএনএ, ডেস্ক: পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির বিশেষ আদালত। মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বুধবার সেই মামলায় পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। রায়টি পাকিস্তানের ইতিহাসে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমবারের মতো সংবিধানকে বিপর্যস্ত করার জন্য একজন সাবেক সামরিক স্বৈরশাসককে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
পারভেজ মোশাররফকে ২০১৯ সালে একটি বিশেষ আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন। লাহোর হাইকোর্ট বিশেষ আদালতের পরে সেই রায়কে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা দিলেও, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের চার সদস্যের একটি বেঞ্চ প্রয়াত সামরিক স্বৈরশাসকের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈশা তাঁর রায়ে বলেন, প্রয়াত মোশাররফের কোনো আইনগত উত্তরাধিকারী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। একাধিক নোটিশ পাঠানো সত্ত্বেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাই আমাদের কাছে এই রায় বহাল রাখা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। ফলস্বরূপ বিশেষ আদালতের তাঁর সাজা বহাল থাকবে। চার বছর ধরে আদালতে এই মামলা বিচারাধীন থাকলেও আজ চতুর্থবারের মতো মোশাররফের আপিলের শুনানি হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈশা রায়ে আরো বলেন, লাহোর হাইকোর্ট ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি যে রায় দিয়েছিলেন তা অপ্রীতিকর (…) টেকসই নয় এবং সে কারণেই সেই রায় বাতিল করা হয়েছে।
১৯৯৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন পারভেজ মোশাররফ। পরে ২০০১ সালের ২০ জুন তিনি রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করেন। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে ২০১৯ সালে পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত ১৭ ডিসেম্বর তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। পরে ২০২০ সালে লাহোর হাইকোর্ট সেই মৃত্যুদণ্ডকে রদ করে বিশেষ আদালতের রায়কে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা দেয়।
দীর্ঘ অসুস্থতার পরে দুবাইয়ে পারভেজ মোশাররফ ২০২৩ সালে মারা যান। পারভেজ মোশাররফ ২০১৬ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের বাইরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। ফলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে পাকিস্তানের এই প্রয়াত স্বৈরশাসকের মৃত্যুর পর তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল।
বিএনএনিউজ/ বিএম/এইচমুন্নী