বিএনএ, চট্টগ্রাম : লকডাউন ও সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে রাতের অন্ধকারে চলাচলকারী আন্তঃজেলা ও দুরপাল্লার বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী গাড়ি আটক করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ(সিএমপি)। রোববার ( ৯ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের সিটি গেইট এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব গাড়ি আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিএমপি কমিশানার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অভিযান চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে অনেকটা গোপনে দেশের অন্য জেলায় গমনকারী যাত্রীবাহী মিনিবাস, মাইক্রোবাস, কার এবং সিএনজি অটোরিকশা আটক করে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়।
এ সময় জরিমানা করা হয় কয়েকটি গাড়িকে। আবার কয়েকটি গাড়ির বিরদ্ধে মামলা দিয়ে আটক করা হয়। তবে, কয়টি গাড়ি আটক করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
অভিযানে অংশ নেয়া কমিশনার ও পুলিশ সদস্যরা চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক লোকদের নিজেদের জীবন, দেশের ও দশের স্বার্থে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্ব স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করে ঈদউদযাপন করার অনুরোধ জানান। যে কোন রকম জনসমাগম ও গাদাগাদি অবস্থান করোনা সংক্রমণকে বাড়িয়ে দেবে বলেও জনগণকে মনে করিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত: গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বজনদের সাথে আসন্ন ঈদ উদযাপনের জন্য লকডাউন ও সরকারি আদেশ অমান্য করে গোপনে মাইক্রোবাস ও কার ভাড়া নিয়ে স্ব স্ব বাড়ি যাচ্ছিল। গাড়িতে অনেক গাদাগাদি করে বসে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সাধারণ মানুষদের গন্তব্যে যাত্রা চলমান লকডাউনের সুফল ভেস্তে যেতে পারে বলে অভিজ্ঞমহল আশংকা করছেন।
গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে কঠোর লকডাউনে আন্তঃজেলা ও দুরপাল্লার সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৬ মে পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধের সময়সীমা বর্ধিত করে পরে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ।
নিজ নিজ অবস্থানে ঈদ উদযাপন করুন : প্রধানমন্ত্রী
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমান করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় নতুন কিছু শর্তে ৫ মে মধ্যরাত থেকে ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানো হলো।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার অভ্যন্তরে বাস চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বন্ধ থাকবে দূরপাল্লার বাস এবং লঞ্চ-ট্রেন চলাচল।
শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে
১. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে স্ব স্ব কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন।
২. দোকানপাট ও শপিংমলগুলো পূর্বের মতো সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সব দোকানপাট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দোকানপাট ও শপিংমল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
৩. আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে আগামী ৫ মের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। তবে ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
৪. মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।
৬. কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন, জেলা সদর, পৌরসভা এলাকাগুলোতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রসঙ্গত, ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। এরইমধ্যে ১৮ এপ্রিল রাতে এক বৈঠকে চলমান বিধিনিষেধ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই বিধি নিষেধ প্রথমে ৫ মে ও পরে ১৬ মে পর্যন্ত করা হলো।
বিএনএনিউজ/আমিন, এসজিএন