।এনামুল হক নাবিদ।
বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় গত ১০ বছরে বাঁশখালীতে ১৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার কালীপুর রেঞ্জে ১১টি এবং জলদী রেঞ্জে ৫টি হাতির মৃত্যু হয়। বিদ্যুতের ফাঁদ, খাদ্যে বিষক্রিয়া, অসুস্থতাসহ নানা কারণে এসব হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে বন বিভাগের তদন্তে উঠে এসেছে।
গত বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের জলদী রেঞ্জের পাইরাং বিটে ৭ থেকে ৮ বছর বয়সী পুরুষ হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। হাতিটিকে হত্যা করে দাঁত ও নখ নিয়ে গেছে শিকারিরা।
এদিকে এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আবারও এই অঞ্চলে হাতি শিকারের ঘটনাকে সামনে আনল। শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চলে কমপক্ষে ১০২টি বন্য হাতি মারা গেছে গত এক দশকে। বন বিভাগের অধীনস্থ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে ১৬টি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে, আর পাঁচটি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।
বন্যপ্রাণী বিভাগ জানিয়েছে, ৫৩টি হাতি ‘বার্ধক্যজনিত জটিলতা’ বা হৃদরোগের মতো ‘প্রাকৃতিক কারণে’ মারা গেছে। কমপক্ষে ১৭টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে, বাকিগুলোর মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করা যায়নি। এই সময়ের মধ্যে, এই অঞ্চলে মানুষ-হাতির সংঘাতে ৪৪ জন মারা গেছে। কিন্তু হাতি হত্যায় মাত্র ১৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হত্যার শিকার হওয়া জায়গাটি স্থানীয় চেচুরিয়ার মনুমার ঝিরি নামক এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবস্থিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, মনুমার ঝিরি এলাকায় ওই হাতিটি কয়েকদিন ধরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকলেও বন বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
জলদী রেঞ্জের রেঞ্জার শাহ আলম বলেন, হাতিটির শরীরে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাতিটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটির পিঠে ও বুকে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাতিটিকে দুই বা তিন দিন আগে হত্যা করা হতে পারে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে বন বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা নিশ্চিত করে যে শিকারিরা হাতিটিকে হত্যা করার পর প্রাণীটির দাঁত ও নখ কেটে নিয়ে গেছে।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ