বিএনএ ডেস্ক, ঢাকা: সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ি সম্প্রদায় আয়োজিত এক যৌথ ব্যবসা পরিষদে (জেবিসি) এ আহ্বান জানান তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার অবস্থানস্থল থেকে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে যোগ দেন শেখ হাসিনা।
বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিশেষ করে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, খাদ্যপণ্য এবং আইসিটি ও আইটিইএস (আইটি সংশ্লিষ্ট সার্ভিসেস) খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাজার এখন উন্নত বেসরকারি ইকুইটি ও ফিন-টেক সমাধান দিতে প্রস্তুত। প্রায় বার বছর আগে সরকার যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলো এখন তা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়িদের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষনীয় সুযোগ লাভের দেশ।
‘বাংলাদেশ নগরায়ন, শিল্পায়ন এবং ব্যক্তির সাথে শাসন, উদ্ভাবন ও বাজার ব্যবস্থার মধ্যে ক্রমবর্ধমান টেলি-যোগাযোগে দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্ব-বাজারের সাথে আমাদের উৎপাদন উপকরনসমূহকে যুক্ত করা।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিতে তাঁর সরকারের নানা ধরনের উদ্ভাবন, কৃষি-সম্প্রসারণ, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্সের কারণে বাংলাদেশের শ্রমাশ্রয়ী আয় অনেক দেশের তুলনায় দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে।
পরে, দুদেশের মধ্যে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার জন্য এফবিসিসিআই এবং ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স এ্যন্ড ইন্ডাষ্ট্রির মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারক সাক্ষরিত হয়। এফবিসিসিআই
প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন ও আবু ধাবি চেম্বার অব কমার্স এ্যন্ড ইন্ডাষ্ট্রির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মোহামেদ আল মাজরাউই নিজ নিজ পক্ষে স্বারকে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব-এশিয়া অঞ্চলের মিলনস্থলে বাংলাদেশ। আমাদের একটি বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার আছে। পাশাপাশি আমাদের নিকটবর্তী অনেক দৃশ্যত সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে। এই সব সুবিধা বাংলাদেশকে বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ পণ্য উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আমাদের হাই-টেক পার্কগুলো এখন প্রস্তুত রয়েছে। আমরা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশকে তাদের নিজ দেশ হিসেবে বেছে নিতে, বিশ্বের সবচেয়ে ভাল দেশ হিসেবে তুলে ধরতে নীতিগত ও অবকাঠামো উভয় ক্ষেত্রেই তাদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি ‘উন্নয়নের জাদু’ হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেছে। সেন্টার ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর)-এর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে- বাংলাদেশ ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে।
শেখ হাসিনা জানান ‘আমরা খুব শিগগিরই আমাদের ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত করতে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হলো- ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ইউএই’র বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী ড. থানি বিন আহমেদ আল জিওদি, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন, আবুধাবী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মোহামেদ আল মাজরাউই’ও বক্তব্য রাখেন।
বিএনএ/এ আর
