23 C
আবহাওয়া
৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » গুজব ছড়ালে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন

গুজব ছড়ালে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন

remour

ধর্ম ডেস্ক: গুজব ও মিথ্যার সয়লাব অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে দিন দিন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এই প্ল্যাটফর্মটিতে সত্য খবর যেমন আছে, তেমনি রয়েছে মিথ্যাও। অনেকে মিথ্যা খবর যাচাই-বাছাই না করেই প্রচারণায় নেমে যান। এতে অন্যরাও বিভ্রান্ত হন এবং অনেক ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্তও নিয়ে বসেন। গুজবের ভয়াবহতা থেকে জাতিকে রক্ষা করতে কঠোর আইন ও সামাজিক সচেতনতা যেমন দরকার, তেমনি দরকার দ্বীনি শিক্ষার প্রসার ও প্রয়োগ।

কোনো সংবাদ যাচাই-বাছাই না করে প্রচার করলে ইসলামের দৃষ্টিতে সে ব্যক্তি একজন মিথ্যুক। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘সব শোনা কথা প্রচার, ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৯২)

ইসলামের নির্দেশনা হলো, সংবাদ প্রচারের আগে অবশ্যই তা যাচাই করে নিতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের কাছে যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো। অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে আক্রান্ত করার আগেই, (না হলে) তোমরা কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ৬)

ইসলামের দৃষ্টিতে মানবজীবনের প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরকালে মানুষকে তার প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। কারণ গুজব এমন একটি কাজ, যা পুরোপুরিই অমঙ্গলজনক। ইসলাম কোনো অবস্থায়ই গুজবকে সমর্থন করে না। ইসলামের শিক্ষা হলো, মানুষ সর্বতোভাবেই মিথ্যা পরিহার করবে। অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা সে বলবে না। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে চুপ থাকে সে মুক্তি পায়।’(তিরমিজি: ২৫০১)

তাছাড়া, মানুষকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করা মুনাফিকের স্বভাব। পবিত্র কোরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তারা তোমাদের সঙ্গে বের হতো, তবে শুধু বিভ্রান্তিই বৃদ্ধি পেত। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা তোমাদের ভেতর ছোটাছুটি করত। তোমাদের ভেতর তাদের কথা শোনার (বিশ্বাস করার) লোক রয়েছে। আল্লাহ অত্যাচারীদের সম্পর্কে অবগত আছেন।’ (সুরা তাওবা: ৪৭)

আল্লাহ তাআলা গুজব রটানোকে শয়তানের কাজ বলেও অভিহিত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তাদের কাছে নিরাপত্তা বা ভয়ের কোনো সংবাদ পৌঁছে, তখন তারা তা প্রচার করে। যদি তারা তা (সংবাদটি) রাসুল বা তাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তির দৃষ্টিগোচর করত, তবে তাদের (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অনুসন্ধানকারীরা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকত, তবে সামান্যসংখ্যক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করত।’ (সুরা নিসা: ৮৩)

পবিত্র কোরআনে ভুল তথ্য অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ, অন্তর, এগুলোর প্রতিটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩৬)

গুজবের কারণে যদি সমাজে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা গুনাহের প্রচলন হয়ে যায়, এর দায়ভারও যিনি গুজব ছড়িয়েছেন তার ওপর এসে বর্তাবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান সওয়াব পাবে, অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে, তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না।’ (আবু দাউদ: ৪৬০৯)

পবিত্র কোরআনে গুজব ছড়ানোর পরিণতি সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি কোনো অপরাধ বা পাপ অর্জন করে, অতঃপর কোনো নির্দোষ ব্যক্তির ওপর তা আরোপ করে, তাহলে সে তো মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য গুনাহের বোঝা বহন করল।’ (সুরা নিসা: ১১২)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গুজবের গুনাহ সম্পর্কে সঠিক উপলব্ধি দান করুন। আমাদের সবাইকে এই ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত রাখুন। আমিন।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ