বিএনএ, বরিশাল: নজিরবিহীন তাপ প্রবাহে জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগের পর আজ ও গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকূলভাগে স্বস্তির বৃষ্টিতে সবার মুখে হাসি ফুটেছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালায় ভর করে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পরে উপকূলজুড়ে এ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বজ্রপাতে জনজীবন সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে।
দুপুর ৩টা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল বিভাগ সহ উপকূলীয় এলাকার কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালের পরবর্তী ৭২ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
সেই সাথে দিন ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পাবার কথাও বলছে আবহাওয়া বিভাগ। বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী, ২৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বহু কাঙ্খিত এ বৃষ্টি জনজীবনের সাথে কৃষি ও মৎস্য সেক্টরের জন্য যথেষ্ট স্বস্তি নিয়ে এলেও আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনী প্রচারণায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে। তবে দুপুরের পর থেকে বৃষ্টিপাত হ্রাস পেলে নগরীজুড়ে প্রচারণা মাইক সহ প্রার্থী ও কর্মীরা প্রচারনায় নেমে পড়েন।
গ্রীষ্মের শেষ সময়ে এসে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের প্রায় ৬ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরে উঠে যাওয়ায় গত দিন পনের ধরেই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। মঙ্গলবার বরিশালে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৩৮ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যায়। অথচ জুন মাসে বরিশালে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ৩১.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
গত মধ্য এপ্রিলে পটুয়াখালীর খেপুপাড়াতে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৪০ ডিগ্রী ছুঁয়েছে। যা ছিল স্মরণকালের সর্বোচ্চ। গত ১৪ এপ্রিল বরিশালে তাপমাত্রা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যয়ে ৩৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছুঁয়ে যায়। যা ছিল আবহাওয়া বিভাগের এ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী।
গত ১ এপ্রিল বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৪৮ ঘন্টা পরেই ৩২.৩ ডিগ্রীতে উঠে যায়। ৩ এপ্রিল দুপুর থেকেই আবহাওয়া চৈত্রের আদলে ফিরতে শুরু করে। ওই দিন তাপমাত্রার পারদ ৩৪.৩ ডিগ্রীতে স্থির হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। গত ১৩ এপ্রিল দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছে। এরপরে মে মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত তাপমাত্রা অনেকটা সহনীয় থাকলেও ২০ মে’র পর থেকেই তাপমাত্রার পারদ ক্রমে ওপরে উঠতে শুরু করে। যা গত ৬ জুন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
বিএনএ/ সাইয়েদ কাজল, ওজি