বিএনএ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকায় মাজারের ওরশ থেকে ডেকে নিয়ে সাজ্জাদ হোসেন (২১) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চার যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত যুবকরা।
সোমবার (৮ মে) রাতে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ৭নং ওযাডের্র হাদিরপুকুর পাড় এলাকার মাঝির স্কুলে সামনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। স্থানীয় আব্দুস সামাদ, মোজাফফর, ইসলাম ও রাসেল নামে এই চার যুবকই এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে নিহতের স্বজনরা।
জানা যায়, নিহত সাজ্জাদ ছোটবেলায় মাকে হারায়। মা মারা যাওয়ার পর আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকায় বড় খালার বাড়ীতে সে বড় হয়। সম্প্রতি তার বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি টুকটাক কাজ করতো সাজ্জাদ।
নিহত সাজ্জাদের মামা শাহজাহান জানায়, গতকাল রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সে স্থানীয় একটি মাজারের ওরশে ছিল। সেখান থেকে কাজ আছে বলে মোবাইলে হাদিরপুকুর পাড় মাঝির স্কুলে সামনে ডেকে নিয়ে আসেন এলাকার স্থানীয় আব্দুস সামাদ, মোজাফফর, ইসলাম ও রাসেল। পরে কাজ আছে বলে একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে কিংবা শ্বাসরোধ করে সাজ্জাদকে মেরে ফেলা হয় বলে তার মামা শাহজাহান জানান। সাজ্জাদকে মেরে তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে আনোয়ারার কালাবিবির দিঘির একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়, সেখান থেকে আনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আনোয়ারা হাসপাতাল থেকে তারা সাজ্জাদকে কারেন্ট ধরেছে মর্মে ফোনে সাজ্জাদের মামিকে জানায়, খবর পেয়ে আনোয়ারা হাসপাতালে ছুটে যান তার মামা শাহজাহান। সেখানে মোজাফফর ছাড়া বাকী যারা ডেকে নিয়ে এসেছেন তারা পালিয়ে যায়। কৌশলে মামা শাহজাহান মোজাফফরকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটকিয়ে ভাগিনা সাজ্জাদকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এখন লাশ মর্গে আছে। মামা শাহজাহান মোজাফ্ফরকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল যেহেতু আনোয়ারা থানায়, ওখানে মামলা না করলে সন্দেহভাজন মোজাফফরকে বেশিক্ষণ আটকে রাখা যাবে না।
মামা শাহজাহান ভোরে আনোয়ারা থানা পুলিশকে বিষয়টি বলেন, কিন্তু পুলিশ তাকে সহযোগিতা না করে উল্টো হয়রানি করতে থাকলে সে ৯৯৯-এ ফোন করে সাহায্য কামনা করে। তারপরও পুলিশ মামলা নেয়নি। ওদিকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ সন্দেহভাজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
শাহজাহান জানায়, পুলিশ মামলা নিলে মোজাফফরকে আটক করা গেলে সব সত্য বেরিয়ে আসতো। আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে ইসলাম, রাসেল, মোজাফফররা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খুন করে। যদি সত্যি সত্যি সে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেতো তাহলে সাজ্জাদের বাড়ির লোকজনকে কেন খবর দিল না? সাজ্জাদের বাড়ি আর ঘটনাস্থল নিকটে। তারা সাজ্জাদকে সেখানে না নিয়ে, খবর না দিয়ে গোপনে ক্লিনিকে কেন নিয়ে গেল, তাছাড়া সামাদ, ইসলাম ও রাসেল এখনও পলাতক। তারা সাজ্জাদের মোবাইলও নিয়ে গেছে। আমি মরদেহ নিয়ে ছুটাছুটির মধ্যেও আনোয়ারা থানায় ভোর থেকে কারও সহযোগিতা পাইনি। আমি আমার ভাগিনার হত্যার বিচার চাই। পলাতক সামাদ, ইসলাম, রাসেল ও মোজাফফরকে গ্রেফতার করা হলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে আব্দুস সামাদ, ইসলাম, রাসেল, মোজাফফররা পলাতক রয়েছে। এ কারণে ঘটনার বিষয়ে তাদের পরিবারের কারও বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত নই। তাই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। বিষয়টা আমরা তদন্ত করে দেখছি।
বিএনএনিউজ/এনামুল হক নাবিদ,বিএম