বিএনএ, ঢাকা: চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হয় ৭ এপ্রিল। আজ ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ এর উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুরানো ধারণা ভাঙতেই এ বিনিয়োগ সম্মেলন। এতে অংশ নিয়েছে ৪০ দেশের ছয় শতাধিক বিনিয়োগকারী।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা নাগাদ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে হবে আনুষ্ঠানিকতা।
সূত্র জানায়, সম্মেলনের প্রথমদিন অনুষ্ঠিত হয় প্লেনারি সেশন। যাতে, দীর্ঘমেয়াদী ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর কথা তুলে ধরা হয়। তাছাড়া, প্রথম দু’দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঢাকার বাইরের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
সামিটের আয়োজক বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বিশ্বের ৫০টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী, বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী এতে অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখানো হয়েছে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘এই সামিটে আমরা শুধু এখনকার নয়, আগামী ১০ বছরের বাংলাদেশের সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরব। বিশ্বকে দেখাব, আমরা কতটা প্রস্তুত উন্নয়নের নতুন ধাপে পৌঁছাতে। এবার সামিটে শুধু অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নয়, বিশ্বব্যাংক, আইএলও এবং এমনকি নাসার সঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বোঝা যায়, শুধু শিল্প-বাণিজ্যই নয়, প্রযুক্তি ও জ্ঞানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আগামী দিনের বিনিয়োগ পরিবেশ যেন স্থিতিশীল হয়—এই বার্তা দিতে সামিটে তিনটি বড় রাজনৈতিক দলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটা একদিকে যেমন বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের প্রচেষ্টা, অন্যদিকে রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কাঠামো নিশ্চিত করার ইঙ্গিত। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতি এবং ব্যাংক খাতের কিছুটা অস্থিরতা স্বীকার করে বিডার চেয়ারম্যান বলেন, ‘এসব সমস্যা অস্বীকার করছি না, কিন্তু এগুলোকে কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনা এবং উদ্যোগও আছে আমাদের।’ তিনি জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানি রপ্তানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এতে করে ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্য নির্ভরতা কমবে, যা দেশের শিল্পায়ন প্রক্রিয়ায় গতি আনবে।
বিগত বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিসরে যাঁর নেতৃত্ব বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গড়তে ভূমিকা রেখেছে, এবারও সেই আস্থার প্রতীক হয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস হাজির থাকছেন এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে। বাংলাদেশ এখন আর শুধু পোশাক খাত নির্ভর অর্থনীতি নয়। প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে দেশ নতুনভাবে ভাবছে। ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ বিশ্বকে সেই পরিবর্তনের বার্তা দিতে চায়— একটি প্রস্তুত বাংলাদেশ, একটি সম্ভাবনার বাংলাদেশ।
এর আগে, ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন বিনিয়োগকারীরা।
বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী