লাইফস্টাইল ডেস্ক: পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি একটু করে যেন শুরু হয়ে গেছে। কারণ রোজার শুরু হতে আর বেশি বাকি নেই। বছরের এই একটি মাস হলো সংযমের। সাধারণের জন্য মেনে চলা সহজ হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা পড়েন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। রোজা রাখতে পারবেন কি না বা রোজা রাখতে হলে বিশেষ কোনো সতর্কতা আছে কি না তা নিয়ে চিন্তিত হন তারা।
ডায়াবেটিক রোগীর রোজা রাখার সময় সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে খাদ্য ব্যবস্থাপনায়।
* সেহরির খাবার সেহরির শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খাওয়া উচিত।
* ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ না করা ভালো।
* ডায়াবেটিক রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যেন তারা পানিশূন্যতায় না ভোগেন। খেজুর খেলে একটা খেতে পারেন। ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই তালিকাভুক্ত করতে পারলে ভালো। ডাবের পানি পান করতে পারেন। যদি কোনো পানীয় পান করেন তবে চিনিমুক্ত পানি বেছে নেওয়াই উত্তম। যদি মিষ্টি পানীয় পছন্দ করেন, তবে সুইটনার যেমন- ক্যানডেরাল, জিরো ক্যাল বা সুইটেক্স ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন (তবে এগুলোও বর্জন করাটা বেশি স্বাস্থ্যকর হবে)। ভাজা পোড়া খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, পুরি, পরোটা কাবাব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন।
* খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন।
যে পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার আগে খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার সময় এবং ধরন বদলাতে হবে। প্রয়োজন হলে নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতি ভোজন এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে, বরং উল্টোটা হতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীর রোজার সময় খাবারের তালিকা
ইফতার
বুট ভুনা ১/২ কাপ (২৫ গ্রাম কাঁচা বুট)
পেঁয়াজু ২টা বড় মাপের (২৫ গ্রাম ডাল)
বেগুনি ২টা মাঝারি (১০ গ্রাম বেসন)
মুড়ি ২ কাপ (২৫ গ্রাম)
মিষ্টি ফল যে কোনো একটি
(শশা, ক্ষীরা, আমড়া, কাজি পেয়ারা, ডাবের পানি, লেবুর পানি, (চিনি ছাড়া) ও অন্যান্য টক ফল ইচ্ছামত খাওয়া যাবে।)
সন্ধ্যা রাত
আটার রুটি ৬০ গ্রাম (২টা ছোট পাতলা) বা ভাত ১.৫ কাপ
মাছ বা মাংস ২ টুকরা
ডাল ১ কাপ মাঝারি ঘন
দুধ (যদি হজমে সমস্যা না হয়) ১ কাপ (সর ছাড়া)
সবজি ইচ্ছামতো (আলু বাদে)
সেহরি
ভাত ২ কাপ (২৪০ গ্রাম)
মাছ বা মাংস ২ টুকরা
ডাল ১ কাপ মাঝারি ঘন
দুধ (যদি হজমে সমস্যা না হয়) ১ কাপ (সর ছাড়া)
সবজি ইচ্ছামতো (আলু বাদে)
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধের সমন্বয়
যারা দিনে ১ বার ডায়াবেটিসের ওষুধ (যেসব ওষুধ ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়) খান, তারা ইফতারের শুরুতে (রোজা ভাঙার সময়) সেটি খাবেন, তবে ডোজ একটু কমিয়ে নিতে হতে পারে।
যারা দিনে একাধিকবার ডায়াবেটিসের ওষুধ খান তারা সকালের মাত্রাটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের মাত্রাটির অর্ধেক পরিমাণে সেহরির আধা ঘণ্টা আগে খেতে পারেন। যেসব রোগী ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাদের রমজানের আগেই ইনসুলিনের ধরন ও মাত্রা ঠিক করে নেওয়া জরুরি।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ