30 C
আবহাওয়া
৩:১২ পূর্বাহ্ণ - মে ১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ক্যাম্প ছেড়েছে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা

ক্যাম্প ছেড়েছে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

বিএনএ, কক্সবাজার: ক্যাম্প ছেড়ে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা স্থায়ী ভাবে মিশে গেছে উখিয়া, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর ও পৌর শহরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, কয়েক হাজার রোহিঙ্গা টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার ১০ ইউনিয়নেও অবস্থান করছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) দেওয়া হিসাব মতে, ক্যাম্পবহির্ভূত রোহিঙ্গারা সীমিত ছিল কেবলই টেকনাফের শামলাপুর, নয়াপাড়া, লেদা ও জাদিমুড়া এলাকায়। কিন্তু বর্তমান হিসাবে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা টেকনাফ ও উখিয়ার ১১ ইউনিয়নের ১০টিতেই ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি ইন্টার-সার্ভিস কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইসিএসজি) প্রকাশিত প্রতিবেদনের সর্বশেষ জরিপ মতে, হোস্ট কমিউনিটি তথা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাসকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮২৭।

পৃথক একটি ডাটাসেটে মিলেছে ছড়িয়ে পড়া এ রোহিঙ্গারা কোন কোন এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে। রোহিঙ্গারা হোস্ট কমিউনিটিতে অবস্থান করছে। তারা কিনে নিয়েছে জমি নির্মাণ করছে বসতবাড়ি। বেশীরভাগ রোহিঙ্গা বন ভূমিতে বসতি গড়ে তুলেছে। সংখ্যার বিচারে টেকনাফ উপজেলার পরিস্থিতি বেশি উদ্বেগজনক।

হ্নিলা ইউনিয়নে রোহিঙ্গাদের ৫ ২৮ পরিবার (সদস্য ), সাবরাংয়ে ৪৯৭ পরিবার (সদস্য ১৯৩৬), টেকনাফ পৌরসভায় ৪২২ পরিবার (সদস্য ২৮৪৯), হোয়াইকংয়ে ৮১৬ পরিবার (সদস্য ৫৪১৪), টেকনাফ ইউনিয়নে ৩৭০ পরিবার (সদস্য ২১৯০) ও বাহারছড়ায় ১ ১৫ পরিবার (সদস্য ৮৬৫) স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলিতভাবে বসবাস করছে। উপজেলার একটিমাত্র ইউনিয়নে রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি নেই, তা হচ্ছে সেন্টমার্টিন।

উখিয়া উপজেলার হিসাবে দেখা যায়, পাঁচ ইউনিয়নের সবক’টিতেই রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি রয়েছে।

হলদিয়া পালংয়ে রোহিঙ্গাদের ৬৩৬ পরিবার (সদস্য ৪৩৫৮), জালিয়া পালংয়ে ৯২৬ পরিবার (সদস্য ১৯৮২ ), পালং খালিতে ৬১৫ পরিবার (সদস্য ৩ ৫১৩), রাজা পালংয়ে ৭৬১ পরিবার (সদস্য ৩৬৯৭ ) ও রত্না পালংয়ে ১২৭ পরিবার (সদস্য ১১৩৬) বাংলাদেশি পরিবারগুলোর সঙ্গেই অবস্থান করছে।

ক্যাম্পে লাখ লাখ, বাইরেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা, স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের উত্তরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল চৌধুরী বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই যে তাদের সর্বান্তকরণে মেনে নেয়নি তা যথার্থভাবেই ধরা পড়েছে বিভিন্ন সংস্থার সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

জরিপে অংশ নেওয়া বাংলাদেশিদের একজনও বলেনি তারা রোহিঙ্গাদের খুব বেশি পছন্দ করে। উখিয়ার ৮৭শতাংশ বাসিন্দা বলেছে, রোহিঙ্গাদের কারণে তারা খুবই অসুখী। টেকনাফে এ হার ৮৯ শতাংশ।

রোহিঙ্গাদের পেয়ে সুখী- এ উত্তর দিয়েছে উখিয়ার ১২ ও টেকনাফের ১৬ শতাংশ উত্তরদাতা। সুখী বা অসুখী কোনোটাই নয়- এমন উত্তরদাতা এসেছে উখিয়ায় ৩৮ এবং টেকনাফে ৪০ শতাংশ।
গত বছর ভয়াল ডিপথেরিয়া যখন ছড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গা শিবিরে, তখন বাদ যায়নি আশপাশের বাংলাদেশিরাও।

গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত বুলেটিন মতে, স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে ২০২ ডিপথেরিয়া কেইস-পেশেন্ট পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ৩০ জনের মধ্যে নিশ্চিতভাবে পিসিআর পাওয়া যায়। ৬৩ জনের ক্ষেত্রে বলা হয় মোটামুটিভাবে নিশ্চিত যে তাদের ডিপথেরিয়া হয়েছে। ১০৯ জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। ডিপথেরিয়ায় বেশ কিছু রোহিঙ্গার মৃত্যু ঘটলেও স্থানীয় কোনো রোগীর এতে প্রাণহানি হয়নি বলে জানানো হয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনটিতে। কক্সবাজার সদর, রামু, কক্সবাজার পৌরসভা, চকরিয়াসহ অন্যান্য এলাকায় এ ধরনের জরিপ চালানো হয়নি।

তবে ধারণা করা হচ্ছে গত পাঁচ বছরে এ সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যাবতীয় সুযোগ সুবিধাও ভোগ করছে। ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভাড়া বাসায় রয়েছে ৬০ শতাংশ।

বিএনএ/শাহীন,বিএম, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ