রায়হান সিকদার, লোহাগাড়া প্রতিনিধিঃ জরাজীর্ণ ভবনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা অঝোপড়া গায়ে প্রতিষ্ঠিত চরম্বা নাছির মোহাম্মদ পাড়া বেসরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সরেজমিনে জানা যায়, অঝোপড়া গায়ে দরিদ্র এলাকায় ২০১৫ সালে তৎকালীন ইউএনও মোঃ ফিজনূর রহমানের আন্তরিক সহযোগীতা, স্হানীয় এলাকাবাসীর সহযোগীতা নিয়ে এ নাছির মোহাম্মদ পাড়া এলাকায় এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন চরম্বার কৃতি সন্তান, উপজেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ে একটি টিনের ভবনের মাধ্যমে ক্লাস শুরু করা হয়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১শত ৮০জন। বৃষ্টি এলেই টিনের ছিদ্র ও ভাঙ্গা ছাউনী দিয়ে পানি শ্রেণি কক্ষে ঢুকে সয়লাভ হয়ে যায়। ভবনের দরজা ভেঙ্গে গেছে। বেঞ্চ গুলোর অবস্হা নাজুক। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনেক শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্হিত বাধ্যতামূলক ।নাছির মোহাম্মদ পাড়া বেসরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুরপার্শ্বে রয়েছে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হতো।
বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপির ডিও লেটারের মাধ্যমে প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আবেদন পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়টি পাশে রয়েছে যান চলাচলের সড়ক। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা ও ভ্যান গাড়ি চালক মুহাম্মদ শফি জানান, আমরা অশিক্ষিত মানুষ। অঝপড়া গায়ে স্কুল না থাকার কারনে আমরা পড়ালেখা করতে পারিনি। এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় পুরো এলাকাটি আলোকিত হয়েছে। আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুল হওয়ায় পড়ালেখা করতে পারছে। তবে,বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝরাজির্ণ।
সরকারীভাবে একটি ভবন হলে আমাদের এলাকার জন্য অনেক ভাল হতো। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ সাইফুল আলম জানান, চরম্বা নাছির মোহাম্মদ পাড়ার আশপাশে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলনা।একসময় শিক্ষার্থীরা অতি কষ্ঠে দুরে গিয়ে পড়ালেখা করতে হতো। এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এলাকার মানুষের সহযোগীতা নিয়ে ২০১৫ সালে নাছির মোঃ পাড়া বেসরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠান পর থেকে পিএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাস করতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যালয়ের টিনের বেড়াগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে।
জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও জাতীয়করণের জন্য মাননীয় এমপি মহোদয়ের ডিও লেটার নিয়ে প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বরাবরে আবেদন করি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ মোসলেম উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ ভবন হলেও সরকারীভাবে সবধরণের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়।
বিদ্যালয়টি এখনো সরকারী করণ হয়নি। তবে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখছে অনেক প্রশংসনীয়। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোঃ আহসান হাবীব জিতু জানান, বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। বিদ্যালয়টির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।