27 C
আবহাওয়া
৩:০২ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কক্সবাজারে প্রস্তুত উদ্বোধনী ট্রেন

কক্সবাজারে প্রস্তুত উদ্বোধনী ট্রেন


বিএনএ, কক্সবাজার : আগামী ১১ নভেম্বর বহুল প্রতীক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন তিনি টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন।

সেই ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধনী ১৫ বগির সঙ্গে অতিরিক্ত আরো ৪টি বগি নিয়ে রওনা হয়ে রাত সাড়ে ৯ টায় ট্রেনটি কক্সবাজার এসে পৌঁছে।

জানা গেছে, ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার নবনির্মিত রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য সকালে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে উপস্থিত হবেন। সেখানে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন উপলক্ষে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে উঠে এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন। পরবর্তীতে স্টেশন চত্বরে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ঐদিন প্রধানমন্ত্রী সকালে প্রথমে হেলিকপ্টারযোগে রামু যাবেন। রামু রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ চলাচলের জন্য উদ্বোধন করে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন নামবেন। কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে নেমে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। এরপর সেখান থেকে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী ট্রেনে রয়েছে ১৫টি নতুন বগি। এই ১৫ বগির সঙ্গে আরো অতিরিক্ত ৪ বগি চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার এসে পৌঁছে। ১৫ বগিতে যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ৪ বগি থেকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রেনে থাকা একটি ইঞ্জিনে যদি কোন ত্রুটি দেখা যায় সঙ্গে সঙ্গে অন্য ইঞ্জিন যাতে লাগানো যায় সেজন্য নেওয়া হয়েছে আরও অতিরিক্ত তিনটি ইঞ্জিন।

ট্রেনে রেলের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশ, আরএনবি সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই ট্রেন কক্সবাজার আসে।ইঞ্জিনসহ বগি সবই নতুন । যা কোরিয়া থেকে আনা হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস বলেন, দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথে আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী যে ট্রেন উদ্বোধন করবেন সেটির বগি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে নিয়ে আসা হয়েছে।

২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। আর পর্যটন শিল্পের বিকাশ পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে তথা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত ব্রিটিশ আমল থেকেই রেললাইন আছে। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে এই প্রকল্পের ব্যয় র্নিধারণ করা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখনো ৯ স্টেশনের মধ্যে বেশ কয়েকটির কাজ চলছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।তবে এর মধ্যে ৯২ শতাংশ কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

এর আগে রোববার ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়। রেলওয়ে পরিদর্শন অধিদপ্তরের সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে প্রথম ট্রেনটি চালক মাহফুজুর রহমান দীর্ঘ ৯ ঘন্টার জার্নি করে কক্সবাজার পৌঁছে সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিটে।যা এই চালক ও ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন। সফলভাবে কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছার পর ট্রেনটি কিছুক্ষণ বিরতি শেষে পুনরায় চট্টগ্রাম ফিরে আসে। এর মধ্যে দিয়ে যেন কক্সবাজারের মানুষের বহু বছরের আক্ষেপ ও প্রতিক্ষার অবসান ঘটলো।

আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে টিকেট কেটে ট্রেনে চড়বেন।এর যাবতীয় খুটিনাটি কারিগরি কাজ শেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বানিজ্যিক ভাবে খূলে দেয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

বিএনএনিউজ/এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন/ এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ