বিএনএ, ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ড. জেবউননেছা রচিত “বেদনাতুর ১৯৭৫ আগষ্টের শহিদদের আলেখ্য” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কোর্চ মেট ও প্রিয় বন্ধু লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন মেজর জেনারেল অব: আলাউদ্দীন এম এ ওয়াদুদ বীর প্রতীক।
এসময় মেজর জেনারেল অব: ওয়াদুদ বলেন, তার এই বন্ধুতের খেসারত ২০০২ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময় তাঁর চাকরির মেয়াদ ১৩ বছর বাকি থাকার সত্বেও তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করে।
জেনারেল ওয়াদুদ স্মৃতিচারনে আরও বলেন, এই পৃথিবীতে খুব কম ভাগ্যবান লোক আছে যাদের সত্যিকারের বন্ধু আছে। আমার ছিল অল্প সময়ের জন্য। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় স্ট্যান্ডার্ড মিলিটারি কোর্স-৮-এর প্রার্থিত সভরিন প্যারেড। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কমিশন লাভ করি আমরা তিনজন গর্বিত তরুণ। একজন হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট বীর শহিদ শেখ জামাল এবং আমরা দুজন অফিসার ক্যাডেট আমি আলাউদ্দীন মো. আবদুল ওয়াদুদ (পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল) ও মাসুদুল হাসান (পরবর্তী সময়ে ক্যাপ্টেন)। শেখ জামাল কখনও কাউকে বুঝতে দিতেন না এবং সবার সাথে এত আপনভাবে মিশতেন মনেই হত না যে সে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র।
তিনি বলেন, তাঁর সেক্রিফাইস অসাধারণ বড় মনের মানুষ না হলে কেউ করতে পারে না। যখন ১ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে স্যান্ডহার্স্টে রেগুলার ক্যারিয়ার কোর্স শুরু হবার কথা। শেখ জামাল এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও অংশ নিলেন না। কারণ তার দুই প্রিয় বন্ধু আমি আর মাসুদ বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলাম। তাঁর ছিল মায়ের জন্য গভীর টান। মাত্র দেড় মাস পর এই সিদ্ধান্তই তাঁর জীবনকে তছনছ করে দেবে, কে জানতো ! ১৯৭৫ সারের কালো রাত্রিতে জাতি হারাল ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর শহিদ পরিবারকে আর আমি হারালাম আমার প্রিয় বন্ধুকে যা পূরণ হওয়ার নই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
আরও পড়ুন: জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বিমানবন্দরে সংবর্ধিত
মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমিটির সভাপতি, ইমিরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মেজ কন্যা হুরুন্নেসা মঞ্জু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সুলতানা নাদিরা এমপি, আফরোজা জামিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ম হামিদ, অধ্যাপক গীতাঞ্জলি বড়ুয়া, মুস্তাফিজুর রহমান ও গোলাম আহমেদ মৃধা।
বিএনএনিউজ/বিএম