25 C
আবহাওয়া
৬:৫২ পূর্বাহ্ণ - মে ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মিতু হত্যা : সাক্ষ্য দিলেন বাবুলের বন্ধু সাইফুল

মিতু হত্যা : সাক্ষ্য দিলেন বাবুলের বন্ধু সাইফুল

ভোলার ন্বীকাররোক্তি: বাবুলই মিতু হত্যার নির্দেশেদাতা

বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। তার সাক্ষ্যতে মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তারের নির্দেশে কর্মচারী মোকলেছুর রহমান ইরাদের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য উঠে আসে।

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে সাইফুল বলেন, ‘আমি আগে প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা করতাম। প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল মান্টিব্যাক প্রিন্ট এন্ড হক লিমিটেড। ওই ব্যবসায়ের অবস্থান ছিল মোহাম্মদপুরের বছিলায়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগে পড়ার সময় বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে।’

‘লেখাপড়া শেষে ঢাকায় চাকরি করার সময়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যহত থাকে। পরবর্তীতে আমি চাকরি ছেড়ে প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করি। ব্যবসার এক পর্যায়ে আমার আর্থিক সংকট দেখা দিলে আমি বাবুল আক্তারকে আমার ব্যবসায়ে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেই। উনি আমার ব্যবসায়ে ২০০৯ সালে মাহমুদা আক্তার ভাবীর নামে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।’

মিতু হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সাইফুল বলেন, ‘২০১৬ সালের ৬ জুন, মিতু ভাবি খুনের পরদিন, সেদিন আমার মোবাইলে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল আসে। ফোন থেকে আমাকে বলা হয় আপনি কি টাকা পাঠিয়েছেন? কিসের টাকা জিজ্ঞেস করলে বলে এসপি বাবুল আক্তার টাকার কথা বলেনি। তখন কলের লাইন কেটে যায়।’

‘এর দুই-তিনদিন পর আমার অফিস সহকারী মোখলেছুর রহমান ইরাদকে নিয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে সমবেদনা জানাতে যাই। সেসময় বাবুল আক্তার ওনার বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চান। একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কোথায় টাকা পাঠাতে হবে সেটা জেনে নিতে বলে। আমি ওই নম্বরটি ইরাদকে দেই। সরলমনে মানবিক দিক বিবেচনা করে ওই টাকা দিয়ে দেওয়ার জন্য আমার একাউন্টসকে নির্দেশনা দেই। পরবর্তীতে ইরাদের (মোখলেসুর রহমান ইরাদ) মাধ্যমে আমি জানতে পারি তিন লাখ পরিমাণের অর্থ বিভিন্ন নম্বরে বিকাশ করা হয়েছে।’

সাক্ষ্য তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সালের ৯ মে পিবিআই থেকে আমাকে ওই ঘটনা তদন্তের জন্য ডাকা হয়। তৎকালীন ইন্সপেক্টর সন্তোষ কুমারের জিজ্ঞাসাবাদে চট্টগ্রাম এসে আমি সবকিছু খুলে বলি। ওই সময় আমার ব্যবহার করা একটি মোবাইলও জব্দ করা হয়। পরের দিন ১১ মে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমার সাক্ষীর জবানবন্দি দেই।’

এসময় তিনি জবানবন্দি ও জব্দ তালিকায় থাকা সই ওনার নিজের বলে স্বীকার করেন। সাক্ষ্য দেওয়ার পর সাইফুলকে জেরা করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফারহানা লিজা বলেন, আজকে তিনজন সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একজন দিয়েছেন। সাক্ষ্য শেষে তাকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জেরা করেন। জেরা এখনো সম্পন্ন হয়নি। আগামীকাল তাকে পুনরায় জেরা শেষে বাকিদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। চলতি বছরের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্য দেন।

অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন— মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ, হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া। আসামিদের মধ্যে শুধু মুসা পলাতক আছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ