21 C
আবহাওয়া
১১:০১ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রাম ডিসি অফিসের দেবতোষ একের ভিতরে তিন!

চট্টগ্রাম ডিসি অফিসের দেবতোষ একের ভিতরে তিন!


।। ইয়াসীন হীরা ও মনির ফয়সাল ।।

দেবতোষ চক্রবর্তী (৫১) একের ভিতরে তিন! একাধারে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী। আবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে বিচারাধীন দুদকের দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি। আদালতের পাশের ভবনে দিব্যি চাকুরি করছেন করিৎকর্মা দেবতোষ চক্রবর্তী! কিন্তু পুলিশ-র‍্যাব তাকে খুঁজে পাচ্ছে না!

অনুসন্ধানে জানা যায়, দেবতোষ চক্রবর্তী  চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা। জেলা  প্রশাসন কার্যালয়ের ২৪০ নম্বর কক্ষে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সদস্য। আইনজীবী সমিতিতে তার রেজিস্ট্রেশন (LIN) নাম্বার ২০১৬০৫৪৫০১। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে তালিকাভুক্ত হন ২০১৬ সালের ১৪ মে। সদস্য হিসাবে যুক্ত হন একই বছর ২১ সেপ্টম্বর।

আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ৩ ধারায় যা আছে

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ. এম জিয়াউদ্দিন বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)কে বলেন, আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ধারা ৩, পৃষ্টা ৯ এ উল্লেখ রয়েছে, সমিতির কোন সদস্য  সরকারি/ আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতে পারবে না। যদি করেন তাহলে ৯ বিধির ১ উপধারা মতে, ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

মিথ্যা হলফনামা দিয়েছে দেবতোষ

চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি) শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, একজন সরকারি চাকুরিজীবী হয়ে দেবতোষ চক্রবর্তী মিথ্যা হলফনামা দাখিল করেছেন। মিথ্যা হলফনামা দিয়ে সরকারি চাকুরি বিধি লঙ্ঘন করেছে। যা শান্তিমূলক অপরাধ।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) ১৯৭৯ বিধিমালার ১৭ ধারায় যা আছে

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী নুরুনবী বুলবুল বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)-কে বলেন, আইন পেশা একটি লাভজনক ব্যবসা। সরকারি বা আধা সরকারি চাকুরি করে আইন পেশায় যুক্ত হওয়া দূরে থাক আইন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই।

এই আইনজীবী আরও বলেন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ এর বিধিমালার ১৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, “কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের অনুমোদন ছাড়া, সরকারি কাজ ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায় জড়িত হতে পারবেন না। অন্য কোনো চাকরি বা কাজ গ্রহণ করতে পারবেন না। পরিবারের সদস্য অর্থাৎ স্ত্রী–সন্তানও ব্যবসা করতে পারবেন না’’।

দেবতোষসহ  পলাতক ৬, গেজেট প্রকাশ

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেবতোষ চক্রবর্তী দুদকের দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি। যা স্পেশাল মামলা নং-৬১/২০২২, কোতয়ালী থানার মামলা নম্বর ০২(১)২০১৯, এসি.সি.জিআর ০১/১৯ ধারা ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা। দেবতোষ চক্রবর্তীসহ ৬ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এবং মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশ গেজেট হিসেবে গত ১ মার্চ প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় “ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ইস্যু করা  হয়। কিন্তু তাহাদের  না পাওয়ায় উহা জারি করা সম্ভব হয় নাই।  এবং যেহেতু ১৯৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি  আইনের ৮৭ ও ৮৮ ধারার বিধান মোতাবেক উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম  গ্রহণ করা হয়েছে এবং আদালতের বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে যে, এই আদালতের বিচারার্থে উক্ত আসামিগণ গ্রেপ্তার এড়াইবার জন্য পলাতক রহিয়াছে বা  আত্মগোপন করিয়াছে”। বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। দেবতোষ চক্রবর্তীসহ ৬ পলাতক আসামির কেউ আদালতে হাজির হয়নি। মামলাটি এখন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারাধীন রয়েছে।

শাহাদাৎ জামিন, দেবতোষও প্রস্তুত

গত ২৮ মে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের এলএ শাখার তৎকালীন ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা, বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম-২ এর উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।  চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনশি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  চারদিন পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। চট্টগ্রাম কারাগারে শাহাদাৎ হোসেনের হাজতি নম্বর ছিল ১০৪৪৫/২৩।

শাহাদাৎ হোসেন দ্রুত জামিন পাওয়ায় মনোবল ফিরে পেয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য দেবতোষ চক্রবর্তী । তিনিও সবকিছু ম্যানেজ করে  দ্রুত আদালতে আত্মসমার্পন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সূত্র জানায়।

দুদকের মামলার পলাতক আসামি, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনজীবী দেবতোষ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সির অনুসন্ধান টিম। এল এ শাখায় ছবি যুক্ত নামের নিচে  থাকা ০১৬৮০১২৫২৬১ মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শান্তি মিশনে নৌ সদস্য, ভাগ্য সুপ্রসন্ন আত্মসাতকারিদের

সূত্র জানায়, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমান্ডার মোস্তফা শহীদ সাফ কবলা মূলে উত্তর পতেঙ্গা মৌজার তিনটি দাগের কিছু জমি কিনে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করেন। ওইসব জমির মধ্যে ২৩ শতক (৪৪১ খতিয়ানের বিএস দাগ আংশিক ৩০০৭) জমি সিটি আউটার রিং রোডের জন্য সরকার অধিগ্রহণ করে। ওই ২৩ শতক জমির ৬ মালিকের বিপরীতে সরকার বরাদ্দ দেয় ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা। এর মধ্যে সৈয়দ আমিরুলের জমি ছিল ৭ শতক; যার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয় ৩৫ লাখ ৬১ হাজার ৯১১ টাকা (এলএ মামলা নম্বর ৮/২০১৩-২০১৪)।

২০১৪ সালের শুরুর দিকে আমিরুলসহ অন্য মালিকরা উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সংশ্লিষ্টদের কাছে জমির দখল বুঝিয়ে দেয়। এ সময় এলএ শাখার সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রারে আমিরুলসহ সব মালিকের তথ্য লিপিবদ্ধ করে পাশে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়। পরে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সময় লেবাননে শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত থাকায় স্ত্রীকে না-দাবিনামা দিয়ে ক্ষতিপূরণ গ্রহণের অধিকার দেন তিনি। এরপর এলএ শাখায় বারবার যোগাযোগ করেও তার স্ত্রী টাকা পাননি। এরপর দেশে ফিরে আমিরুল হক ভূমি অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ক্ষতিপূরণের ৩৫ লাখ ৬১ হাজার ৯১১ টাকাসহ মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা (রূপালী ব্যাংকের লাভলেইন লেডিস ব্রাঞ্চের চেক নম্বর ০১৫৬১৯২) মিজানুর রহমান মাসুদ নামের এক ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জমি কার? ক্ষতিপূরণ কে পেল?

নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সৈয়দ আমিরুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে অভিযোগে উল্লেখ করেন। পুরো ২৩ শতক জমির জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছিল এক কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা; সেখানে এক কথিত মালিককে পুরো টাকাটাই দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত শামসুল হককে ৪৪ লাখ ৭৫ হাজর ৮৮১ টাকা, ইকবাল হোসেনকে প্রায় ৫ লাখ ৮৩ হাজার ও হারুন-উর-রশীদকে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৯২০ টাকার চেক দেওয়া হয়। অর্থাৎ ২৩ শতক জমির জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৫৭ লাখ ২৭ হাজার ৮০২ টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। অথচ আমি ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত।

৪০নং  কাউন্সিলরের পরিবর্তে ২নং  কাউন্সিলরের প্রতি স্বাক্ষর

নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সৈয়দ আমিরুল হক অভিযোগ করেন, ভূমি অধিগ্রহণ অফিসের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে মেপে জমি বুঝে নেওয়ায় তারা জানে, এই জমির মালিক কারা, এরপরও ক্ষতিপূরণ অন্যকে দিয়েছে। ক্ষতিপূরণপ্রাপ্তির না-দাবিনামায় স্থানীয় ৪০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পরিবর্তে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রতি স্বাক্ষরে টাকা পরিশোধ হয়েছে; যা স্বাভাবিক অবস্থায় কোনোক্রমেই সম্ভব না।

১ কোটি ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ

দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে চট্টগ্রাম আউটার লিংক রোড প্রকল্পে ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি মামলা করে দুদক।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে দুদক। কিন্তু জজ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এবং মহানগর  সিনিয়র স্পেশাল জজ  ড. বেগম জেবুননেছার আদালত দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষমতা নেই দুদকের

আদালত দুদকের চুড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেয়া প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, “সার্বিক আলোচনার প্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, বাদী কর্তৃক আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের prima facie পাওয়া যাওয়ায় এই মামলার অগ্রসর হওয়ার যথেষ্ট উপাদান রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।  আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ কিংবা উক্ত টাকা পরবর্তীতে পরিশোধ করা হলে বিচার ছাড়া কোন অপরাধীকে অপরাধের দায় হতে মুক্তি দেয়ার সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষমতা তদন্তকারি কর্মকর্তাকে দেয়া হয়নি, যা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। তাই তদন্ত রিপোর্ট অগ্রাহ্য করতঃ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো।

এইক্ষেত্রে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগের 68 DLR (2016) 67 এ প্রকাশিত Giasuddin-al-Mamun vs State মামলার উদ্ধৃতি দেয়া যেতে পারে। এই মামলায় মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ দুদক কর্তৃক কতেক আসামিকে চার্জশীটভুক্ত এবং কতেক আসামিকে নট সেন্ট আপ করায় সকল আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন”।

মহানগর দায়রা জজ  এবং মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ  বেগম জেবুননেছা মামলাটি আমলে নিয়ে ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

১৫ আসামি নাম ও ঠিকানা:

আসামিরা হলেন- মিজানুর রহমান মাসুদ (২৬), হাফিজুর রহমান (৬২),। মো. পারভেজ আলম (২৯), তিনি চট্টগ্রামের বায়োজিদের পশ্চিম শহীদ নগরের রফিক সওদাগরের বাড়ির হাফিজুর রহমানের ছেলে। মাবিয়া খাতুন (৭০), তিনি চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গার পশ্চিম হোসেন আহাম্মদ পাড়ার হাজী নুরুল ইসলাম কন্ট্রাকটর গলির হক সাহেবের বাড়ির মৃত নুরুল হকের স্ত্রী। ছকিনা খাতুন (৬৫), তিনি চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ফুলছড়ি পাড়ার হাফেজ রহমত উল্লাহ্র শেখ আহাম্মদের স্ত্রী। নুরে কানিজ রীনা (২৮), তিনি চট্টগ্রামের বন্দর থানার আব্দুল আলী সওদাগর পাড়ার  ফুল গাজী সারেং এর বাড়ির মো. শাহজাহানের স্ত্রী। লাকী বেগম (৩৪), তিনি চট্টগ্রামের বায়োজিদের পশ্চিম শহীদ  নগরের রফিক সওদাগরের বাড়ির রেজাউল করিমের স্ত্রী। মো. শহীদু ইসলাম মুরাদ (৩৭), বি-বাড়িয়ার আখাউড়া থানার টনকী গ্রামের মো. খলীলুর রহমানের ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার। মো. মজিবর  রহমান (৪০),  কুমিল্লার চান্দিনার মুরাদ নগরের মৃত হাজী মো. খোরশেদ আলমের ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সার্ভেয়ার। মো. নুর চৌধুরী (৫২), তিনি চট্টগ্রামের পটিয়ার পাইরুল গ্রামের মৃত আহম্মদ হোসেনের ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার ও বর্তমানে মিরসরাই ভূমি অফিসের প্রেষণে সার্ভেয়ার হিসেবে কর্মরত।

মো. আমানাতুল মাওলা (৩৬), তিনি নোয়াখালী সদরের মহতাপুরের মৃত আব্দুল মান্নান ভূইয়ার ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সার্ভেয়ার। আশীষ চৌধুরী (৫০), চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাটের বাবু বিশ্বেশ্বর চৌধুরীর ছেলে,  একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার। সুশীল বিকাশ চাকমা (৫৬), তিনি রাঙ্গামাটি সদরের সাপছড়ির  রবিচন্দ্র চাকমার ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক কানুনগো এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কানুনগো হিসেবে কর্মরত।

দেবতোষ চক্রবর্তী (৫১), তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এবং বর্তমানে কক্সবাজারের এল এ শাখার অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন (৪৩), তিনি নোয়াখালীর চাটখিলের পূর্ব সোসালিয়া গ্রামের হোসেন আহমেদের ছেলে, একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের এল এ শাখার সাবেক অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এবং সাবেক  ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা, বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম-২ এর উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন।

পলাতক আসামিরা

মামলায় পলাতক রয়েছেন- মাবিয়া খাতুন, ছকিনা খাতুন, মো. নুর চৌধুরী, সুশীল বিকাশ চাকমা ও দেবতোষ চক্রবর্তী।

জামিনে থাকা আসামিরা

মামলায় জামিনে আছেন মিজানুর রহমান মাসুদ, হাফিজুর রহমান, মো. পারভেজ আলম, নুরে কানিজ রীনা, লাকী বেগম, মো. শহীদু ইসলাম মুরাদ,  মো. মজিবর  রহমান,  মো. আমানাতুল মাওলা, আশীষ চৌধুরী ও মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন।

করিৎকর্মা দেবতোষ!
দুদক মামলা দায়ের হওয়ার পর দেবতোষ চক্রবর্তীকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। শাস্তি এতটুকুতে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু করিৎকর্মা দেবতোষ চক্রবর্তী সব কিছু ম্যানেজ করে ফের চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হয়ে আসে। শীর্ষ কর্মকর্তাদের আশির্বাদ দেবতোষ চক্রবর্তীর ওপর আগেও ছিল, এখনো আছে, আগামীতে থাকবে! এমন মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সৎ কর্মকর্তা কর্মচারিরা।

বিএনএ/ রেহেনা, হাসনা হেনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ