বিএনএ,ঢাকাঃ নিউক্লিয়ার পদার্থ বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হিরন্ময় সেন গুপ্ত মারা গেছেন। শনিবার (৮ জানুয়ারি) প্রথম প্রহরে হাসপাতালেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন গুণী এই ব্যক্তি।
ঢাকার বারডেম হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
শোকবার্তায় উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক ড. হিরন্ময় সেনগুপ্ত ছিলেন অত্যন্ত সৎ, দেশপ্রেমিক, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানী। প্রথিতযশা এই শিক্ষক ও গবেষকের অসংখ্য মৌলিক গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত ও সমাদৃত হয়েছে। তিনি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অত্যন্ত সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অমায়িক ব্যবহারের জন্য সহজ-সরল প্রকৃতির এই গুণী অধ্যাপক বিভাগীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পদার্থবিজ্ঞানের প্রসারে বিশেষ করে নিউক্লিয়ার পদার্থ বিজ্ঞানের গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ড. হিরন্ময় সেন গুপ্ত চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
ড. হিরন্ময় সেনগুপ্ত ১৯৬৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপারভাইজার জোসেফ রটব্ল্যাটের অধীনে নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৩-১৯৭৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ল্যাবরেটরি এবং ১৯৮১-৮২ সালে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পোস্টডক্টোরাল গবেষণা করেন।
১৯৮২-১৯৯২ পর্যন্ত ইতালির ট্রিস্টে আবদুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিকাল ফিজিক্সের (আইসিটিপি) সিনিয়র সহযোগী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৫৫-২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ড. হিরন্ময় সেনগুপ্ত জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট ছিলেন।
অধ্যাপনার পাশাপাশি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর দুই শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো ছিলেন।
বিএনএ/এমএফ