বিএনএ ডেস্ক: ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ান ডে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। ৭ বছর পর ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতের বিরুদ্ধে টাইগারদের এমন গর্জন দেখলো সারা বিশ্ব। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ভারত হারলো ৫ রানে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এমন সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেষ দুই ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৪০ রান। মাহমুদউল্লাহ’র ৪৯তম ওভারে রোহিত শর্মা তুলে নেন ২০ রান। তখনও ম্যাচটি ঝুলছিলো। শেষ ওভারে দরকার আর ২০ রান। অধিনায়ক লিটন দাস আস্থা রাখেন অভিজ্ঞ মুস্তাফিজে। তবে ব্যাট হাতে যখন ভারতের অধিনায়ক রোহিত তখনও বাংলাদেশের জয় নিয়ে শঙ্কা ছিল।
প্রথম ৪ বলে মুস্তাফিজ দেন ৮ রান, শেষ ২ বলে দরকার ১২। পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকান রোহিত শর্মা। তখনই যেন ম্যাচের পট পরিবর্তন হয়ে যায়, শেষ বল দরকার আরেকটি ছয়। দারুণ ছন্দে থাকা রোহিতের ব্যাটে তখন ছক্কা হাঁকানো যেন পান্তাভাত। তবে বোলার তো দেশ সেরা পেসার মুস্তাফিজ। শেষ বলটি রোহিতের পায়ে করায় ১ রানের বেশি নিতে পারেন নি ভারতীয় অধিনায়ক। আর তাতেই ৫ রানের জয় পায় টাইগাররা।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হয়। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ দল। স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান যোগ করতেই সাজ ঘরে ফেরেন ছয় ব্যাটার। এনামুল হক ১১, লিটন দাস ৭, শান্ত ২১, সাকিব ৮, মুশফিক ১২ ও আফিফ ফিরে যান শূণ্য রানে।
এরপর মেহেদী মিরাজকে সাথে নিয়ে হাল ধরে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৬৫ বলে ১৪৮ রানের জুটি গড়ে খাদের কিনারে থাকা দলকে টেনে তোলেন তারা। দলীয় ২১৭ রানের মাথায় ৯৬ বল খেলে ৭৭ রান করে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ। তবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশি কোনো জুটির এটাই সর্বোচ্চ রান।
আরও পড়ুন-কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে সেমিতে যাওয়ার লড়াই
এরপর লেগ স্পিনার নাসুম আহমেদকে নিয়ে হাল ধরেন প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক মিরাজ। ২৩ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন তারা। তাতেই বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়ে যায়। পাশাপাশি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নেন মিরাজ। শত রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া দলের প্রয়োজনের সময় ১১ বলে কার্যকর ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নাসুম আহমেদ।
ভারতের পক্ষে ওয়াশিংটন সুন্দর ৩ টি এবং ২টি করে উইকেট শিকার করেন ওমর মালিক ও মোহাম্মদ সিরাজ।
বল হাতেও জ্বলে ওঠে বাংলাদেশ বোলাররা, নিয়মিত বিরতিতে ভারতের উইকেট তুলে নেন তারা। ৩৯ রানে ভারত ৩ উইকেট হারানোর পর হাল ধরেন কে এল রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার। তাদের জুটিতে আসে ২৬ রান। দলীয় ৬৫ রানের মাথায় কে এল রাহুল ফিরে যান ১৪ রানে। এরপর আক্সার প্যাটেলকে সাথে নিয়ে ১০১ বলে ১০৭ রানের জুটি গড়েন শ্রেয়াস আইয়ার। দলীয় ১৭২ রানের মাথায় শ্রেয়াস আইয়ার ফিরে যান ব্যক্তিগত ৮২ রানে। তারপর আক্সার প্যাটেলও বেশি সময় ক্রিজে টিকতে পারেন নি। ১৮৯ রানের মাথায় ৫৬ রান করে সাজ ঘরে ফিরে যান তিনি। শেষ দিকে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ২৮ বলে ৫১ রানেও ভারত পরাজয় এড়াতে পারে নি।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩ উইকেট শিকার করেন এবাদত হোসেন, ২টি করে উইকেট পান সাকিব ও মিরাজ এবং ১টি করে উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ ও মাহমুদউল্লাহ।
শত রান ও ২ উইকেট নিয়ে প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শনিবার চট্টগ্রামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। সিরিজ নিশ্চিত হলেও ম্যাচটি লাল সবুজের প্রতিনিধিরা হালকাভাবে নেবে না বলে জানিয়ে দিলেন অধিনায়ক লিটন।
বিএনএনিউজ২৪,জিএন