বিএনএ,চট্টগ্রাম : ভাল প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর কথা বলে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করতে আটকে রেখে ধর্ষণ চেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার ( ৬ আগস্ট ) নগরীর হালিশহর থানাধীন ছোটপুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় সেখান থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার দক্ষিন পাড়ার ধলা মিয়ার মেয়ে সাদিয়া আক্তার রুনা (১৯) এবং লক্ষিপুর জেলার কমলনগর থানার উত্তর চর মার্টিন এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. ফরিদ (২৮)।
র্যাব সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অপহৃত ভিকটিম ১৩ বছর বয়সের এবং টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। প্রতিবেশী সাদিয়া আক্তার রুনার সাথে তাদের ভাল সর্ম্পক ছিল। গত ৩১ জুলাই রুনা ভিকটিমকে ফোন করে জানায় চট্টগ্রামে ভাল প্রতিষ্ঠান আছে, আরো দুইজন মেয়ে পড়াশোনা করে তুমি আসলে ভাল পড়াশোনা করতে পারবে। পরদিন ১ আগস্ট সকালে ভিকটিম কাউকে কিছু না বলে রুনার সাথে যোগাযোগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর চলে আসে এবং রুনার কথামতো মো. ফরিদের সাথে সিএনজি অটেরিকশা করে হালিশহর থানাধীন একটি টিনসেড ভাড়াঘরে আসে।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভিকটিম ঘরে অন্য কোন মেয়ে মানুষ দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফরিদ বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা ও এলোমেলো কথাবার্তা বলতে থাকে। পরবর্তীতে রুনা ভিকটিমকে জানায় মো. ফরিদ তার স্বামী। ভিকটিম বাড়ি ফিরে যেতে চাইলে রুনা নিষেধ করে এবং তার টাকা পয়সা এবং অলংকারাদি নিয়ে নেয়। এছাড়া গত ৩ আগস্ট রাতে আসামি ফরিদ ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভিকটিম বটি দিয়ে ধাওয়া করলে ফরিদ চলে যায়।
এতে আর বলা হয়েছে, ভিকটিমের বাবা ভিকটিমকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাবে মেয়ের সন্ধান করতে করতে জানতে পারেন যে, তার মেয়েকে চট্টগ্রাম শহরে কতিপয় অপরাধী আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে তার মেয়েকে উদ্ধার ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য ভিকটিমের বাবা র্যাবের কাছে আবেদন করেন। ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণের সাথে জড়িত আসামি গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
র্যাবের একটি আভিযানিক দল গত ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকার একটি টিনশেড ভাড়াঘর হতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সাথে জড়িত সাদিয়া আক্তার রুনা ও মো. ফরিদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
র্যাব-৭, চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ( মিডিয়া ) মো. নুরুল আবছার আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে বলেন, মো. ফরিদ এর সাথে রুনার অবৈধ সম্পর্ক ছিল এবং তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বাসা ভাড়া করে থাকত। তারা মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিভিন্নভাবে তারা সহজ সরল অভাবগ্রস্থ নারী ও শিশুদের কাজ দেওয়ার নাম করে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে, অর্থ উর্পাজনের জন্য পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করত। গ্রেপ্তারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিম সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনএনিউজ২৪.কম/এনএএম