31 C
আবহাওয়া
২:২৫ পূর্বাহ্ণ - মে ১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে পানি, নদীপাড়ে ভাঙন আতঙ্ক

পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে পানি, নদীপাড়ে ভাঙন আতঙ্ক

ভাঙন

বিএনএ ডেস্ক: ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসামে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। ত্রিপুরার বৃষ্টিপাতে মৌলভীবাজারের মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি আরও বেড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন।

এদিকে বাড়ছে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি। খোয়াই ও ধলাই নদের পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব মিলে দেশের সাত নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে বন্যার পানি কমছে নেত্রকোণা, সিলেট ও হবিগঞ্জে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে। পদ্মার পানি বৃদ্ধি তিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে এই দুই নদীর পানি উপচে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাপাউবোর নদ-নদীর পানির পরিমাপ করার ১০৯টি স্টেশনের মধ্যে ৭৩টিতে পানি বেড়েছে, কমেছে ৩৬টিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১৬৫ মিলিমিটার, ত্রিপুরার কৈলাশহরে ৪৩, আসামের শিলচরে ৮৭ ও তেজপুরে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এরই মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের নিম্নাঞ্চলের কিছু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। তা ছাড়া গোয়ালন্দ ও দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন বাড়ছে।

নদীতে ভাঙন, আতঙ্কে মানুষ

আবার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে মৌলভীবাজারের নদ-নদীতে। গতকাল জেলার মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি কয়েকদিনের তুলনায় আরও বেড়েছে। আর স্থিতিশীল আছে ধলাই নদের পানি। গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের শিলুয়া গ্রামে ভাঙনে এ তিন এলাকায় নদীতীরবর্তী গ্রামের মেঠোপথ ধসে যাচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রামসহ আশপাশের ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। অব্যাহত ভাঙনে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মৌলভীবাজার পাউবো সূত্র জানায়, গত সোম ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার নদ-নদীগুলোর পানি অনেকটাই কমে এসেছিল। কিন্তু বুধ ও বৃহস্পতিবার আবার বেড়েছে।

মৌলভীবাজার বাপাউবোর কর্মকর্তারা জাকির হোসেন এলাকাগুলোতে নদীভাঙন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, সরেজমিন ভাঙনের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভাঙনের স্থানে মেরামতকাজ শুরু করা হবে।

এদিকে গতকাল দুপুর ১২টায় জেলার মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় মনু নদীর পানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার, যা বুধবার ছিল ১৫ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। জেলা সদরের চাঁদনীঘাট এলাকায় এ নদীর পানি আবার বেড়েছে। বুধবার পানি ছিল ৯ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। গতকাল দুপুর ১২টায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটারে। কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। জেলার শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি আবার বাড়ছে। বুধবার এ নদীর পানি ছিল ৭ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। গতকাল দুপুর ১২টা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটারে। বেশ কয়েকদিন ধরে জুড়ী উপজেলার জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদীর বিপদসীমা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। বুধবার ছিল ৯ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার।

নেত্রকোণা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় যেসব স্থানে পানি উঠেছিল, তা নেমে গেছে। আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। জেলার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান বলেন, নিম্নাঞ্চলে পানি মোটামুটি থাকবে। বন্যার আশঙ্কা কেটে গেছে। মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে।

লালমনিরহাটের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, তিস্তার পানি এখন স্বাভাবিক। গত বছর এই নদীর পানি ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটারকে বিপদসীমা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এ বছর তা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার করা হয়েছে। আপাতত লালমনিরহাটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সিলেটের বাসিন্দা কাওছার আহমদ জানান, জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের যেসব এলাকায় পানি উঠেছিল, তা নেমে গেছে। মানুষ স্বাভাবিক চলাফেরা করছে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ