বিএনএ, চট্টগ্রাম : চলমান করোনা মহামারীর মাঝে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ভারত ফেরত ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ১০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া যায়নি।
তাদের যশোর বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতাল থেকে আজ শুক্রবার (৭ মে) ভোর রাত ৩টার দিকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। বতর্মানে তাদেরকে হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, ভারত ফেরত এই ১০ জনের মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালের ২৯নং ওয়ার্ডের কেবিনে ও তিনজনকে ১৬নং মেডিসিন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ক্যানসার আক্রান্ত রোগী। রয়েছেন তাদের অভিভাবকও।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শিলব্রত বড়ুয়া বলেন, চিকিৎসা শেষে গত ৪ মে ভারত থেকে বেশ কয়েকজন রোগী বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এদের সবাইকে সরকার যার যার জেলা হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশনা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের ১০ জন চমেক হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন পালন করতে আসেন। এদের মধ্যে সাতজনকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ও তিনজনকে ১৬ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলার তিনজন, চন্দনাইশ উপজেলার তিনজন, কর্ণফুলী থানার তিন এবং পটিয়া উপজেলার একজন রয়েছেন।
২৯ নম্বর ওয়ার্ডে কোয়ারেন্টাইনে ভর্তি হওয়া রোগীরা হলেন- চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা ফজল করিমের ছেলে রেজাউল করিম রাজু (২৪), চন্দনাইশের বাসিন্দা ইউসুফের মেয়ে হাসমত আরা বেগম (৫২), একই উপজেলার বাসিন্দা ফজল কাদেরের মেয়ে আয়শা সুলতানা (২৪), ফটিকছড়ির বাসিন্দা ইউসুফের ছেলে ইকবাল হোসেন (২৪), একই উপজেলার বাসিন্দা জহুরের ছেলে রমজান আলী (২১), কর্ণফুলী থানার বাসিন্দা মৃত রশিদ আলীর ছেলে আনিছুর রহমান ও একই উপজেলার বাসিন্দা ইকবাল আহমেদের মেয়ে ফাহমিদা ইয়াসমিন (১৯)।
অপরদিকে অসুস্থ হয়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীরা হলেন- চট্টগ্রামের চন্দানাইশ উপজেলার বাসিন্দা ইলিয়াছের ছেলে জাকারিয়া (৩৪), ফটিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ইউসুফের মেয়ে রহিমা বেগম (৪৬) ও কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা ইকবাল আহমেদের স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪১)।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, ভারত ফেরত এদের কারও শরীরে কোভিড শনাক্ত হয়নি। তিন জনের শরীর অসুস্থ থাকায় তাদের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়া হয়েছে। সবাইকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
এর আগে গত ৪ মে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেনাপোল বন্দর হয়ে বিভিন্ন জেলার মানুষ বাংলাদেশে আসে। তখন এদের সবাইকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে যশোর বক্ষ্যব্যাধী হাসপাতালে রাখা হয়। তবে গতকাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় যার যার জেলার হাসপাতালে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ভারতফেরত এসব রোগী ভর্তি হওয়ায় পুরো হাসপাতাল এলাকায় একধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এছাড়া কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) উপাচার্যের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক চট্টগ্রামের করোনার ধরন নিয়ে পরীক্ষা করেন। এসব পরীক্ষায় যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতের করোনার ধরন মিলছে। কিন্তু ভারতীয় কোনো ধরন নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া যায় নি। এ নিয়ে চট্টগ্রামবাসী একটু স্বস্তিও পেয়েছিল। তবে এবার ভারতীয় ধরন ছড়ানোর ভয় চট্টগ্রামবাসীর মধ্যে কাজ করছে।
বিএনএনিউজ/মনির