বিএনএ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা ফের আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ৮ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯ দিন আদালত বর্জন করবেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিশেষ সাধারণ সভা ও আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. তানভীর ভূঞা জানান, গত ৩০ জানুয়ারি সমিতির সাধারণ সভা করে তাদের কর্মসূচি ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। সভায় বলা হয়েছিল, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পুনরায় বিশেষ সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘দাবি পূরণের জন্য আইনমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটার বাস্তবায়ন দেখছি না। দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার পুনরায় সাধারণ সভা করে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সব আইনজীবীর মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু হবে।’
জেলা আইনজীবী সমিতি জানায়, শীতকালীর ছুটির আগে গত ১ ডিসেম্বর আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওইদিন তিনটি মামলা না নেয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা। পরে ২ জানুয়ারি বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে গত ৪ জানুয়ারি আদালতের কক্ষে ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালন করে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।
এ ঘটনার পর গত ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু করেন আইনজীবীরা। তারা জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এ ছাড়াও আন্দোলন চলাকালে জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দেয়ার অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ জানুয়ারি রাতে ঢাকায় আইনমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে আদালতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।
বিএনএনিউজ/এ আর