বিএনএ, ঢাকাঃ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আজ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন শুরু হবে। এতে যোগ দিতে সকাল থেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও মহানগর ইউনিটের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে দলে দলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট দিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে সম্মেলনস্থলে।
যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। উদ্যানের গেটগুলোতে হিউম্যান স্ক্যানার বসানো হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে সম্মেলনস্থলে।
সর্বশেষ ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালের মে মাসে। ওই বছরের জুলাইয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম রাব্বানী দায়িত্ব পান। তারা পদ হারালে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতি পদে আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক পদে লেখক ভট্টাচার্য আসেন। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ‘ভারমুক্ত’ হন তারা।
এবার ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনে বয়সসীমা কত হবে, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। ছাত্রলীগের গত চার সম্মেলনে নেতাদের বয়সসীমা ২৯ বছর পর্যন্ত ছিল। তবে এবার বয়সসীমা কিছুটা শিথিল হতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ছাত্রলীগের বয়সসীমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি সম্মেলনের মঞ্চে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে বয়সের বিষয়ে কভিড মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার আলোচনা আছে দলের মধ্যে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। এবারে বুয়েট এবং ঢাকার বাইরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদেরও গুরুত্ব দেয়ার দাবি উঠেছে দলের অভ্যন্তরে।
জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। জাতীয় সম্মেলনের পর একসঙ্গে এই চার কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার পদপ্রত্যাশীদের মনোনয়নপত্র নভেম্বরের ২৬ থেকে ২৯, ঢাবি শাখার মনোনয়নপত্র ২ ডিসেম্বর এবং কেন্দ্রীয় কমিটির মনোনয়নপত্র ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি পদে ৯৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটিতে সভাপতি পদে ১০২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮২টি মনোনয়ন সংগ্রহ করা হলেও সভাপতি পদে ৮৩টি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০টি মনোনয়নপত্র হাইকমান্ডে জমা দেয়া হয়েছে।
ঢাবি কমিটিতে অন্য কমিটির মতো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আলাদা মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়নি। এই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৪৫টি মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র বিক্রি করে ছাত্রলীগের তহবিলে জমা হয়েছে ২৬ লাখ সাত হাজার টাকা।
বিএনএ/এমএফ