বিএনএ, চট্টগ্রাম: জোয়ার ও টানা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। কোথাও কোমর আবার কোথাও হাঁটু সমান পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় কষ্ট।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার সড়ক ও অলিগলি ডুবে যাওয়ায় বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। জোয়ার ও বৃষ্টির পানি থৈ থৈ করায় প্রয়োজনীয় কাজে অনেকেই বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। ঘর থেকে বের হয়েই বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, নালা-নর্দমায় পলিথিন ও আর্বজনা জমে থাকায় পানি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় জমে আছে কোমর সমান পানি। হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই।
এদিকে, নগরীর বহদ্দারহাটে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনও হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। এই পানিতেই তার ব্যবহার করা গাড়ি রাখা আছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় মেয়র বের হতে পারেননি বলে জানা যায়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল জানিয়েছেন, মূলত মুষলধারে বৃষ্টি ও জোয়ার শুরু হওয়ায় নগরী প্লাবিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় ও স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থাকতে পারে আরও ২ থেকে ৪ দিন। পাহাড়ধস হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই আবহাওয়াবিদ।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নগরীর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চাক্তাই খালের মাটি পুরোপুরি অপসারণ না করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের দাবি।
চউকের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্ বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। হয়েছে ৭৯ শতাংশের মতো। এ অবস্থায় এবারও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে, যদি না চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন তাদের নালা-নর্দমা পরিচ্ছন্নতার কাজ ঠিক সময়ে এবং ঠিকভাবে না করে। এখন আমি বলছি ঠিক সেটাই হয়েছে। যেখানে যেখানে শহরের সড়ক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট তলিয়ে গেছে, সেখানে নালা-নর্দমার পরিচ্ছন্নতা ঠিকভাবে হয়নি। তাছাড়া বৃষ্টির সাথে জোয়ারের পানি যোগ হওয়ায় এই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার একটি প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। গত মে মাসে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের প্রকল্পের প্রায় ৭৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
বিএনএনিউজ/বিএম/ হাসনাহেনা