বিএনএ, ঝিনাইদহ : শৈলকুপার কবিরপুরে খন্দকার প্রাইভেট হাসপাতালে একের পর এক অপচিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগে ক্লিনিকটিতে অক্সিজেনের অভাবে এক নবজাতক মারা যায়। গত সোমবার সন্ধ্যার পরে পেটে ব্যথা নিয়ে এক রোগী এলে বলা হয় এ্যাপেনডিক্স হয়েছে কিন্তু অপারেশন করার পর দেখা গেছে তার কোন এ্যাপেনডিক্স নাই । প্রায় ৩ মাসের বাচ্চা পেটে ছিল, জরায়ুর মুখে আটকে ছিল, শেষে অপারেশন করে তা ফেলে দেয়া হয়। মরণাপন্ন অবস্থায় পড়ে রোগী। অপারেশন থিয়েটারে রোগীর ব্যাপক রক্তক্ষরণ শুরু হলে তড়িঘড়ি করে তার শরীরে ৪ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। শৈলকুপার চর বাখরবা গ্রামের লিটনের স্ত্রী মাহফুজা এমন অপচিকিৎসার শিকার হন।
মাহফুজার স্বামী লিটন জানান, এ্যাপেনডিকস্ বলে অপারেশন করে ডাক্তাররা। এই অপারেশন করেন ইবি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পারভেজ হাসান।
ডাক্তার পারভেজ হাসান জানান, রোগীটির টেস্টের কাগজে এ্যাপেনডিক্স রিপোর্ট ছিল ।এদিকে প্রশ্ন উঠেছে নিশ্চিত না হয়ে হাতড়াতে হাতড়াতে কেন দুইদফা অপারেশন করা হলো ? ডাক্তার পারভেজ রেজা কেন এমনটি করলেন?
খন্দকার প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক ফজলুর রহমান জানান,শৈলকুপার কবিরপুর প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এ্যাপেনডিক্সরে ভুল রিপোর্ট নিয়ে আসায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারী স্বাস্থ্যবিধি ভেঙ্গে অফিস ফাঁকি দিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে এসে জমজমাট ক্লিনিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের ডাক্তার পারভেজ হাসান। তিনি শৈলকুপার খন্দকার ডায়াগনস্টিক ও প্রাইভেট হাসপাতালে দীর্ঘ দেড় যুগের বেশী সময় রোগী দেখেন ও অপারেশন করে থাকেন। তিনি নিজেকে কখনো এনেস্থেসিয়া,( অজ্ঞান এর ডাক্তার) কখনো সার্জিক্যাল ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সব ধরণের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছেন। তার হাতে বেশ কিছু রোগী এর আগে মারা গেছে বলে অভিযোগ আছে।বিভিন্ন সময়ে ডাক্তার পারভেজের বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট সহ রোগীরা অভিযোগ করলেও শৈলকুপা স্বাস্থ্য বিভাগ, সিভিল সার্জন অফিস বা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা তদন্ত করেনি। তিনি নিয়মিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল থেকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলাতে এসে ক্লিনিকগুলোতে সেবার নামে জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে একজন সার্জিক্যাল ডাক্তার, একজন এ্যানেস্থেসিয়া ও রেজিস্ট্রার্ড নার্স বা সেবিকা থাকা আবশ্যক থাকলেও তিনি একাই সব চালিয়ে যান। ফলে কথা উঠেছে একই অঙ্গে এই ডাক্তারের কত রূপ । ডাক্তার পারভেজ সুবিধামতো সময়ে কাগজপত্রে যেখানে যা প্রয়োজন তা কিছু অসাধু ডাক্তারদের ম্যানেজ করে করিয়ে নিয়ে সেসবের বৈধতা রাখার চেষ্টা করেন ।
এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শৈলকুপার বেশীরভাগ ক্লিনিকে এ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার বাদে সিজারের রোগী সহ অন্যান্য সব ধরনের জটিল অপারেশন করা হচ্ছে। যার ফলে হরহামেশা রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে।
বিএনএ/ আতিক, ওজি