25 C
আবহাওয়া
৯:৪৭ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘উচিত শিক্ষা দিতে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা’

‘উচিত শিক্ষা দিতে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা’

'উচিত শিক্ষা দিতে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা'

বিএনএ, ঢাকা: আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে উচিত শিক্ষা দিতেই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি ট্রাম্পস ক্লাবের স্বত্বাধিকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে আশিষ রায়কে গ্রেফতারের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায় র‌্যাব। সংস্থার মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন আশিষ রায়।

খন্দকার মঈন জানান, সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আদালতের নির্দেশনা মেনে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানের একটি ভাড়া বাসা থেকে আশিষ রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের মূখপাত্র জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর কানাডায় পালাতে চেয়েছিলেন আশিষ রায়। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে নতুন মামলা হবে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

কমান্ডার মঈন বলেন, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৫৯।

১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ৯ জনের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০০১ সালে ৩০ নভেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে মামলা বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই মামলার ১নং আসামি আদনান সিদ্দিকী দুই বছর পর হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট পুনরায় আরেকটি রায় দেন। এ রায়ে আগের জারি করা রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ।

সর্বশেষ চলতি বছরের গত ২৮ মার্চ আদালত অনুপস্থিতির কারণে ছয় পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন। এরও এক মাস পর পরোয়ানার কপি সংগ্রহ করে র‌্যাব।

নায়ক সোহেল চৌধুরী
নায়ক সোহেল চৌধুরী

উচিত শিক্ষা দিতেই চিত্রনায়ক সোহেলকে হত্যা

বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে চলত অনৈতিক কার্যক্রম ও উচ্চশব্দে গান-বাজনা। এর প্রতিবাদ করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। এ নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গেও বাগবিতণ্ডা হয়। প্রকাশ্যে অপমান করায় সোহেল চৌধুরীকে উচিত শিক্ষা দিতে ওই ক্লাবের স্বত্বাধিকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌথ পরিকল্পনায় হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। হত্যার দায়িত্ব নেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তখনকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে দায়িত্ব দেন। ইমনসহ তার গ্যাং ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই বনানী ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে।

গ্রেপ্তার আশিষ রায় জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে বলেন, তিনি ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটি এয়ারলাইন্সের ডিরেক্টর (অপারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি আরেকটি এয়ারলাইন্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত।

পলাতক আসামিদের সঙ্গে আশিষ রায়ের যোগাযোগ

আশিষ রায় অসংখ্যবার বিদেশে গেছেন। তিনি কানাডায় প্রায় পাঁচ বছর ছিলেন। বর্তমানে কানাডায় পলাতক বান্টি ইসলাম, থাইল্যান্ডে পলাতক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখিয়ে আমেরিকায় পালিয়ে যাওয়া আদনানের সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই মামলার অপর আসামি ফারুক, লিটন, ইমন ও তারেক সাঈদ জেলে রয়েছে।

কানাডায় পালাতে চেয়েছিলেন আশিষ রায়

গত ২৮ মার্চ আশিষ রায় চৌধুরীর নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হওয়ার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে ছিলেন তিনি। এজন্য ৭ এপ্রিল কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। এ কারণে নিজের বাসা ছেড়ে গুলশানে একটি বাসা ভাড়ায় উঠেন। যেটি একটি পাঁচ তারকা হোটেলের এমডি ভাড়া করে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে কানাডায় যেতে তিনি একটি এয়ারলাইন্সের টিকিটও কাটেন।

আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে হবে মাদক মামলা

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, আশিষ রায়ের মাসে সাত লিটার মদ পান করার লাইসেন্স রয়েছে বলে দাবি করেছেন। যদিও তিনি সেটি দেখাতে পারেননি। আমরা অভিযানের সময় তার ভাড়া বাসা থেকে ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, একটি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, দুটি আইফোন ও নগদ দুই লাখ টাকা জব্দ করেছি। এজন্য নতুন করে তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা করা হবে।

বিএনএ/ এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ