বিএনএ, ঢাকা : ট্রেনে আগুনের ঘটনায় এলিনা ইয়াসমিন নামের এক নারীকে খোঁজার জন্য তার স্বজনরা হাসপাতালের মর্গে আসেন । এলিনা তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ১০ দিন আগে ছেলেসহ গ্রামের বাড়িতে যান । বাবার দাফনের পর ভাই-ভাবির সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি।
কমলাপুরের অদূরে গোপীবাগ এলাকায় ট্রেনটির কয়েকটি বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এলিনার স্বজনদের দাবি, এই আগুনে এলিনা মারা গেছেন। তবে আগুনে মরদেহগুলো পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।
পুলিশ জানান, মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে নিহত চারজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে পুলিশ । এলিনার স্বজনেরা শনিবার সকালে মর্গে এসে ভিড় করেন। তবে এখনো তার সন্ধ্যান মিলতে পারেনি ।
এলিনার ভাসুর মুরাদ হোসেন জানান, এলিনার বাবা ১০ দিন আগে মারা যান। সেজন্যই তারা গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। বেনাপোল এক্সপ্রেসে তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী এলিনা ইয়াসমিন ও পাঁচ মাসের ছেলে সৈয়দ আরফান এবং আরফানের মামা–মামি ছিলেন। গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী সদর থানা । ঢাকায় মিরপুর ৬০ ফিটের বাসায় পরিবারের নিয়ে থাকতেন। কমলাপুর রেলস্টেশনে ফিরছিলেন তারা। শিশু আরফানের বাবা সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন তখন ঢাকার বাসায় ছিলেন।
মুরাদ হোসেন আরও বলেন, ‘শিশু আরফানকে নিয়ে তার মামা-মামি ট্রেন থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও এলিনা বের হতে পারেনি।
আমাদের ধারণা, এলিনা ট্রেনের ভেতর পুড়ে মারা গেছে। মর্গে আনা চার মরদেহের মধ্যে এলিনাও আছে।’
ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপপরিদর্শক (এসআই) সেতাফুর রহমান জানান, মরদেহ চারটি পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে দেখে এদের মধ্যে একজন পুরুষ, একজন শিশু এবং বড় চুল দেখে একজনকে নারী হিসেবে শনাক্ত করা গেছে। বাকি একজন পুরুষ না কি নারী তা দেখে বোঝার উপায় নেই। ‘রাতেই সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহ চারটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হবে।
’বেনাপোল এক্সপ্রেস ১৫৪ যাত্রী নিয়ে শুক্রবার দুপুর ১টায় বেনাপোল থেকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথে ১১টি স্টেশনে বিরতি নেয় বেনাপোল এক্সপ্রেস। তখন ওই ট্রেনে কমলাপুরগামী যাত্রী ছিলেন ৪৯ জন। রাত ৯টার দিকে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও গোপীবাগ এলাকায় পৌঁছালে আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের ৫টি বগি পুড়ে গেছে। এসব বগিতে থাকা চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন ৮ জন। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের সবার শ্বাসনালীর পুড়ে গেছে। চিকিৎসক বলছেন তারা শঙ্কামুক্ত নয়।
বিএনএনিউজ/ আজিজুল/ এইচ.এম।