36 C
আবহাওয়া
৮:৩৩ অপরাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কোরআনের তেলাওয়াত শুনলে যে সওয়াব

কোরআনের তেলাওয়াত শুনলে যে সওয়াব

কোরআন

ধর্ম ডেস্ক: কোরআনুল কারিম আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশীগ্রন্থ। প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াতের যেমন গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে, তেমনি তেলাওয়াত শোনাও সওয়াবের কাজ। মহানবী (স.) কখনো কখনো সাহাবায়ে কেরামকে দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করাতেন এবং গভীর আগ্রহসহ তেলাওয়াত শুনতে পছন্দ করতেন।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) আমাকে বলেন, ‘আমার কাছে কোরআন পাঠ করো।’ আমি বললাম, আমি আপনার কাছে কোরআন পাঠ করব, অথচ আপনার ওপর কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি অন্যের তেলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি।’ (বুখারি: ৫০৫৬)

কোরআনের তেলাওয়াত শোনার কিছু উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো

আল্লাহর রহমত নাজিল হয়
যখন কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, তখন মহান আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয়। যারা মনোযোগসহ কোরআন তেলাওয়াত শোনে তাদের ওপরও রহমত অবতীর্ণ হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগসহ তা শোনো এবং নিশ্চুপ হয়ে থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত করা হয়।’ (সুরা আরাফ: ২০৪)

আল্লাহ প্রশংসা করেন
যারা কোরআনের মজলিসে অংশগ্রহণ করে ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত করে ও শোনে, মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের মজলিসে তাদের প্রশংসা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (স.) বলেছেন, ‘যখন কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর কোনো ঘরে সমবেত হয়ে আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে এবং পরস্পর তা নিয়ে আলোচনা করে, তখন তাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হয়, তাদের আল্লাহর রহমত ঢেকে নেয়, ফেরেশতারা তাদের ঘিরে রাখে এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তাদের প্রশংসা করেন।’ (আবু দাউদ: ১৪৫৫)

কোরআন হেদায়াতের পথ দেখায়
পবিত্র কোরআন মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখায়। কোরআন মানুষের হৃদয়কে প্রশান্ত করে, হৃদয়ের বক্রতা দূর করতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই এ কোরআন হেদায়াত করে ওই পথের দিকে, যা সর্বশ্রেষ্ঠ (সরল, সুদৃঢ়) এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনদের সুসংবাদ দেয় যে তাদের জন্য আছে মহাপুরস্কার।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৯)

ঈমান বৃদ্ধি পায়
পবিত্র কোরআন এমন বরকতময় কিতাব, যার তেলাওয়াত শোনার মাধ্যমে মুমিনের ঈমান বৃদ্ধি পায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন তো তারা, আল্লাহর কথা আলোচনা করা হলে যাদের অন্তর প্রকম্পিত হয়। আর যখন তাদের কাছে আয়াত তেলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে। আর তারা তাদের রবের ওপর নির্ভর করে।’ (সুরা আনফাল: ৮)

অন্তরে নূর তৈরি করে
পবিত্র কোরআন মানুষের অন্তরে হেদায়াতের নূর তৈরি করে। ফলে বান্দা মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করে পাপ থেকে ফিরে আসে, যা তার আখেরাতকেও নূর দ্বারা আলোকিত করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো—খাঁটি তাওবা। আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত। নবী ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদের সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম: ৮)

নেকি লাভের মাধ্যম
কোরআনের তেলাওয়াত শোনার সওয়াব রয়েছে। কেননা আল্লাহ তাআলা শোনারও নির্দেশ দিয়েছেন। আর আল্লাহর প্রত্যেক নির্দেশ মেনে চলার সওয়াব রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগসহ তা শোনো এবং নিশ্চুপ হয়ে থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত করা হয়।’ (সুরা আরাফ: ২০৪)

প্রসঙ্গত, হাদিস অনুযায়ী, কোরআন তেলাওয়াত করলে প্রতি হরফে ১০ নেকি পাওয়া যায়।, তেলাওয়াত শোনারও সওয়াব রয়েছে। তবে তা তেলাওয়াতের সমান নয় বলে মত দিয়েছেন অনেক আলেম। কেননা সুরা আরাফের ৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ কোরআন তেলাওয়াত করা হলে তা মনোযোগসহকারে শোনার নির্দেশ দিয়েছেন এবং চুপ থাকতে বলেছেন। বোঝা যাচ্ছে যে, তেলাওয়াতটা আগে। আর তেলাওয়াত হলো বড়ই ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এটি প্রমাণিত। আল্লাহর কালামের জন্য যিনি চুপ থেকেছেন তিনিও আল্লাহর নির্দেশ মানার কারণে সওয়াব পাবেন কিন্তু কোরআন তেলাওয়াতের মতো অতটা ফজিলত তিনি পাবেন না। তেলাওয়াতের ব্যাপারে রাসুল (স.)-এর স্পষ্ট হাদিস রয়েছে যে, তেলাওয়াত হচ্ছে, স্বয়ংসম্পূর্ণ ইবাদত আর শ্রবণ করা বা চুপ থাকা এই দুটি কোরআনুল কারিমের মর্যাদার কারণে ইবাদত হয়েছে।

তবে ‘রেকর্ডকৃত কোরআন তেলাওয়াত শুনলে নির্ভরযোগ্য আলেমদের মতে সওয়াব হবে না’ (ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ২/১০৪)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন তেলাওয়াত করার, তেলাওয়াত শোনার, কোরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ