33 C
আবহাওয়া
৯:৪২ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ৮৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

৮৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

নির্যাতন

বাংলাদেশের জনস্থানে (পাবলিক প্লেস) শতকরা ৮৭ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশুর যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের ৬৬ শতাংশ জীবনে একবার হলেও এসব স্থানে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। আর ৭ শতাংশ প্রায়ই এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন।

জনস্থানে নারীর নিরাপত্তায় ইয়াং বাংলা, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই), ইউএনডিপি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক যৌথ জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দেশের ২৪ জেলার প্রতিটি থেকে ২০৮ জন নারী ও কন্যাশিশুকে নিয়ে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অনলাইনে এই সমীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে এক কর্মশালায় সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপন করা হয়। কর্মশালায় গবেষক হিসেবে এসব তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন রায়।

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সাধারণত ৪২ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশুরা জনস্থানে ইভটিজিংয়ের শিকার হন। এ ছাড়া ১৭ শতাংশ অশালীন আচরণের সম্মুখীন, ১২ শতাংশ শারীরিক বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত স্পর্শ অনুভব ও ১১ শতাংশ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, নারী ও কন্যাশিশুরা যৌন হয়রানির শিকার সব থেকে বেশি হয় গণপরিবহনে। জরিপে অংশ নেয়া ৩৬ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু বাস, ট্রেন বা লঞ্চে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া ২৩ শতাংশ নারী রাস্তা-ঘাটে, ১১ শতাংশ মার্কেট বা শপিং মলে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, যৌন হয়রানি হওয়ার পরে ৩৬ শতাংশ নারী প্রতিবাদ করেছেন। অন্যদিকে প্রতিবাদ করেননি বা কাউকে জানাননি ৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া ৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের অবহিত করেছেন, ৫ শতাংশ আশপাশের লোকদের সাহায্য চেয়েছেন এবং কেবল ১ শতাংশ নারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করেছেন।

সমীক্ষায় অংশ নেয়া ৪৮ শতাংশ নারী নারীদের প্রতি সম্মানের অভাবকেই এসব যৌন হয়রানির কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া ১৯ শতাংশ নারী জনবহুল গণপরিবহনকে ও ১০ শতাংশ নারী আইন প্রয়োগের অভাবকে এর জন্য দায়ী করেছেন।

কর্মশালায় অন্যান্য সমীক্ষার তথ্যও তুলে ধরা হয়। অ্যাকশন এইডের ২০১৫ সালের জরিপের তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী কন্যাশিশুদের শতকরা ৯০ শতাংশই রাস্তা, বাজার বা বিপণিকেন্দ্র, গণপরিবহনসহ অন্যান্য জনস্থানে যৌন হয়রানি, সহিংসতা ও অবাঞ্ছিত শারীরিক স্পর্শের শিকার হন। ৮৪ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু অবমাননাকর ও যৌন কটূক্তিমূলক মন্তব্যের শিকার হয়ে থাকেন। ২০১৮ সালে ব্র্যাকের সমীক্ষাতে ৯৪ শতাংশ নারী তাদের জীবনে কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে উঠে এসেছে। অস্বস্তিকর অবস্থার সম্মুখীন হওয়ার কারণে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী গণপরিবহন এড়িয়ে চলেন বলেও বিষয়টি উঠে আসে ওই সমীক্ষায়।

কর্মশালায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক বলেন, রাস্তাঘাট বা পরিবহনে আমাদের নারীদের নিয়মিত যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এটি প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশে এখনো যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন হয়নি। আমরা ইউএনডিপির পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি এই আইনটি করার জন্য।

অপরাজিতার নির্বাহী পরিচালক অনুপ কুমার মণ্ডলের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অতিথি ছিলেন, ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইকুয়ালিটি সেকেন্ড সেক্রেটারি পাওলা কাস্ত্রো নেইডাস্টার, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সেলিনা আহমেদ, খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাসান, আইনজীবী শামীমা সুলতানা শিলু, শহর সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবিদা আফরিন, খুলনা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম রেজাউল ইসলামসহ অন্যরা।

Loading


শিরোনাম বিএনএ