বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের প্রায় প্রতিটি সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং, অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল ও যাত্রী ওঠানামাসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং সড়ক আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
গত অক্টোবর মাসে নগরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৭ শত ১১টি মামলা করেছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্ত ১ কোটি ২৬ লাখ ১০ হাজার ২৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি আটক করা হয়েছে ৪ হাজার ৪ শত ৩৬টি।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে নগরের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে। এতে ১ হাজার ৩২৯টি মামলা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৩৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং গাড়ি আটক করা হয়েছে এক হাজার ৭৯৭টি। জরিমানা বেশি হয়েছে ট্রাফিক উত্তর বিভাগে। এতে জরিমানা করা হয়েছে ৪৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এছাড়া এক হাজার ২৬৩টি মামলা এবং এক হাজার ৩৪৫টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগে ৬২৯টি মামলা, ৮৭৫টি গাড়ি আটক এবং ২৭ লাখ ৫০ হাজার জরিমানা করা হয়েছে। ট্রাফিক বন্দর বিভাগে ৪৯০টি মামলা, ৪১৯টি গাড়ি আটক এবং ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নগরের সড়কগুলোতে অসংখ্য অবৈধ গাড়ি চলাচল করে। পাশাপাশি যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, উল্টো পথে গাড়ি চালানো, শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কারণে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ফিটনেস না থাকা এবং রুট পারমিট না থাকাসহ সড়ক পরিবহন আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সেই অনুযায়ী আর্থিক জরিমানা ও গাড়ি আটক করা হয়। তবে অভিযান অব্যাহত থাকার পরও নগরে যানজট কমছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, রুট পারমিট ছাড়া নগরে গাড়ি প্রবেশ করলে বা লাইসেন্স না থাকলে ৭৫০ টাকা জরিমানা দিতে হয়। এর জন্য পুলিশ একটি লিখিত রশিদ দেয়। কিন্তু এর বাইরে আরো ২০৭৫ টাকা ক্ষেত্র বিশেষে জরিমানা নেয়, কিন্তু সেটার জন্য কোনো রশিদ দেয় না।
জানা যায়, বিআরটিএর অনুমোদিত গাড়ির পাশাপাশি মহানগরীর সড়কসমূহে অবাধে চলছে অনুমোদনহীন মোটরসাইকেল, টেম্পো, সিএনজি টেক্সি, শত শত লাইসেন্সবিহীন রিকশাসহ অন্যান্য গাড়ি। অবৈধ এসব গাড়ি সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ও পুলিশকে ম্যানেজ করে চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খোঁড়াখুঁড়ি এবং নগরীর বিভিন্ন সড়ক দখল করে ইট–বালি, নির্মাণসামগ্রী রাখায় যানজটে ভোগান্তি বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সবগুলো থানা। এরপর আগস্টের শেষের দিকে পুলিশ কর্মক্ষেত্রে ফিরতে শুরু করে। পুলিশ পুরোদমে কাজ শুরু করলেও সড়কে স্বস্তি মিলছে না। যানজট কমছে না।
বিএনএনিউজ/ আরএস/হাসনা