বিএনএ ডেস্ক: মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৬৮ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোববার রাত ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৬৮ জন সদস্য অস্ত্রসহ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে
গতকাল রাত পর্যন্ত বিজিপির আহত সদস্যসহ ৫৪ জন সীমান্ত অতিক্রম করে এপারে আশ্রয় নেয়। এর আগে সকালে পালিয়ে এপারে আশ্রয় নেয় ১৪ বিজিপি সদস্য। তাদের অস্ত্র ও গুলি রয়েছে বিজিবির হেফাজতে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া গুলিবিদ্ধ ১৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের জান্তা সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে দু’জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রাত ৮টার দিকে বিজিবি সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। তারা হলো জা নি মং ও নিম লাইন কিং। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজনকে কুতুপালংয়ের এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে তিন বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। মর্টার শেল ও গুলি থেমে নেই। কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। কিছু লোক এপারে ঢুকে বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। উৎকণ্ঠায় রয়েছে সীমান্তের লোকজন।
তুমব্রু সীমান্তের মসজিদের ইমাম খোরশেদ আলম কাওয়াসারী বলেন, গেল শনিবার ভোর থেকে ব্যাপক মর্টার শেল ও গুলি চলছে। কয়েক ধাপে মিয়ানমার থেকে বেশ কিছু মানুষ বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। তাদের পরনে ছিল বিজিপির পোশাক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিজিবি সদস্য বলেন, শনিবার বিকেল থেকে মিয়ানমারের ভেতরে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়। সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে এ সময় বিজিবি কঠোর অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় রোববার ভোরে বিজিপির কিছু সশস্ত্র সদস্য বাংলাদেশে ঢোকে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, তুমব্রু সীমান্তে ব্যাপক মর্টার শেল ও গোলাগুলি চলছে। আমরা শুনেছি, বেশ কয়েকজন বিজিপি সদস্য এপারে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কতজন, সেটা এ মুর্হতে বলা যাচ্ছে না। আমরা জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সীমান্তে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বলেছি। সব সংস্থা মিলে আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ