বিএনএ ক্রীড়া ডেস্ক: অবশেষে টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে নতুন ইতিহাস গড়লো টাইগাররা। ৮ উইকেটে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জিতে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে সফরকারীরা।
কিউইদের মাটিতে এর আগে কোনো ফরম্যাটেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ দিয়েই সেই খরা কেটে গেল, তাও আবার ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের করা লিড ৩৯ রানের জবাবে ব্যাট হাতে নেমে শুরুটা ভালো করেনি বাংলাদেশ। শুরুতেই ৩ রান করে সাউদির বলে কিপার ব্লান্টেনের গ্লাভসবন্দি হন ওপেনার সাদমান। এরপর ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গ দিতে নামেন অধিনায়ক মুমিনুল। আহত হওয়ার কারণে ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয়।
১৪.২ ওভারে আউট হয়ে যান শান্ত। কাইল জেমিসনের ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে ক্যাচ লুফে নেন রস টেলর। ৪১ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৭ রানে সমাপ্তি ঘটে তার ইনিংসের। শান্তর আউটের পর মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন অধিনায়ক মুমিনুল। ৪৪ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৩ রান করেন অধিনায়ক।
বে ওভাল টেস্টের আগেও নিউজিল্যান্ডে প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে লিড নেয়ার পর ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। সাকিবের ডাবল সেঞ্চুরির সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। দ্বিতীয়বারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড পেয়েছে। এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেনি না টাইগাররা। এমন ইতিহাস গড়া কীর্তির নায়ক পেসার এবাদত হোসেন চৌধুরী। ২১ ওভারে ৬ মেডেনে ৪৬ রানের খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দেশের বাইরে টেস্টে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি।
৫ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে ব্যাট হাতে নামে নিউজিল্যান্ড। অপরাজিত ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং স্তম্ভ রস টেলর। ৩৭ রানে দিন শুরু করা ব্যাটসম্যান মাত্র ৩ রান যোগ করেই বিদায় নেন। এরপর এবাদতের শিকার হন জেমিসন। রানের খাতাই খুলতে পারেননি এ টেলএন্ডার। তার আগেই শরিফুলের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়েছেন তিনি।
বুধবার বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫ উইকেট। বোলাররা সময় নিয়েছে ১০ ওভারের একটু বেশি। এবাদত ও তাসকিন দুর্দান্ত বোলিংয়ে বেশি দূর এগোতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। এদিন মাত্র ২২ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রানে অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৫৮ রান করে ১৩০ রানের লিড পায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১৬৯ রান। অর্থাৎ ২ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান পূরণ করে কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে চার দিন দাপট দেখিয়ে পাওয়া এই জয় নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট অপরাজিত থাকার ধারারও শেষ হলো নিউজিল্যান্ডের।
বিএনএনিউজ/আরকেসি