বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ও তার আশেপাশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত জন। এ ঘটনায় নিউমার্কেট এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার পর নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে আহত অবস্থায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহতরা হলেন- কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মো. আলাউদ্দিন (২৬), নোয়াখালীর কবিরহাটের সোহরাব হোসেন (২২), ফয়সাল (২৫), আশরাফুল (৩০), জাহাঙ্গীর (২৬), সৌরভ (২২), মনির (২২), চিশতী (২৮), তাহমিন (১৯), শান্ত ইসলাম (২২), মাঈনউদ্দিন (২৪), কাওছার হোসেন (২৪), মাহবুব হোসেন (২৪), মো. মারফ (২৭), এহসান উল্যাহ (২৮), শাহীন (২৪), মো. শাহীন (২৬), শাকিব উদ্দিন (২০), আদিল (২৫), রিদোয়ান (২৪), সাকিব উদ্দিন (২৩), ফারুক (২০), কাঞ্চন চক্রবর্তী (৪৭) ও মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮)।
এছাড়াও চমেকে আহত অবস্থায় এসেছেন সীতাকুণ্ড থেকে ফারহান (২৩), শুকুর (২০), অনিক (২৫), আবু তাহের (২৭), সুজন (৩৫), সাজ্জাদুল হক (২৭), জয়নাল আবেদিন (৩০), মো. কালাম উদ্দিন (২৭), রিমন (২২), নয়ন (৩২), রিমন (২২), নয়ন (৩২), বাবু (২০), মো. হাসান (১৯), মো. আসিফ (১৭), তাহমিদুল ইসলাম (২৩), আরিফ আহমেদ (৩৩), তপু (২৬), মো. কফিল (২৫), রবিউল আউয়াল (২৯), বাদশা (২৪), সাইফুল (৩৫), মো. ইমরান (১৯), পটিয়ায় আহত সাহেদ (২৩), মিন্টু চৌধুরী (৩৮), সুমন বিশ্বাস (২৬) ও মো. হাসান (২০)।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. মোমিন উল্লাহ ভুইঁয়া জানান, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে অন্তত ৪৫ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন গুলিবিদ্ধ। গুরুতর আহত দুজন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বেশিরভাগই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অনেকের হাতে-পায়েও আঘাত রয়েছে।
এর আগে, সকাল ১০টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলেও নিউমার্কেটের আশেপাশে ছিল না পুলিশ। তারা এ সময় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরকারি সিটি কলেজের সামনে পটকা ফোটাতে থাকে। হঠাৎ করেই বেলা সাড়ে ১১টার পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছোঁড়ে। সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট চত্ত্বর থেকে আশেপাশে ছোটাছুটি করতে থাকে।
তবে এর মিনিট দশেক পরেই শিক্ষার্থীরা আবারও নিউমার্কেট চত্বরে জড়ো হয় এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তখন ফের পুলিশ টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে যোগ দেয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাও। এসময় কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজও শোনা গেছে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট সড়ক ছেড়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। এরপরেই সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা নিউমার্কেট চত্ত্বরে অবস্থান নেন। এরপরেই পুলিশ সেখান থেকে সরে যায়।
এদিকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে , সিটি কলেজ রোডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অফিসের পেছন থেকে গুলি ছুড়ছে হেলমেট পরা এক লোক। তার পাশে থাকা আরেকজনকে ককটেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, যেকোনো প্রকার সংঘাত এড়ানোর জন্য নগর পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় কোনো হুমকি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবে।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/ বিএম/হাসনা