বিএনএ, ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ৭ ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। এছাড়া হাইকমিশনে হামলার সময় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এনই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও প্রতিবেশী দেশের জাতীয় পতাকা অপমানের ঘটনায় ত্রিপুরা পুলিশ তাদের তিনজন সাব-ইন্সপেক্টরকে বরখাস্ত করেছে এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ সদর দপ্তরের একজন উপ-পুলিশ সুপারকে (ডিওয়াইএসপি) প্রত্যাহার করেছে। এছাড়া হামলার এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজন ভারতীয়কে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
মূলত সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি সহ ব্যাপক বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথিত নিপীড়নের নিন্দা এবং ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তি দাবির নামে সেখানে তাণ্ডব চালায়।
আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের ব্যানারেই সেখানে হামলা ও তাণ্ডবের সময় এই ভাঙচুর ও হাইকমিশন অফিসের পতাকা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।
ইন্ডিয়া টুডে এনই বলেছে, বিক্ষোভের নামে হাইকমিশনের সামনে জড়ো হওয়ার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে একটি দল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। তবে একপর্যায়ে ওই গ্রুপের কিছু সদস্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে, হাইকমিশন চত্বরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অপমান করে।
এই ঘটনায় সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আগরতলার ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত এবং বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশন প্রাঙ্গণে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কিরণ কুমার বলেছেন, বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছি এবং একজন ডিওয়াইএসপিকে পুলিশ সদর দপ্তরে স্থানান্তর করার পাশাপাশি তিনজন সাব-ইন্সপেক্টরকে বরখাস্ত করেছি। একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও তদন্ত চলছে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, “আগরতলা সার্কিট হাউসে গান্ধী মূর্তির সামনে বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়েছিল এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিল। দুর্ভাগ্যবশত, কিছু ব্যক্তি জোরপূর্বক বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বা প্রতিবাদ গ্রহণযোগ্য, কিন্তু এ ধরনের আচরণ একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।
বিএনএনিউজ/ আরএস