বিএনএ,চট্টগ্রাম: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কখনও ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করেননি। বাংলাদেশকে সকল ধর্মের সকল মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তার অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে হজযাত্রীদের জন্য কোনো সরকারি অনুদান ছিল না। বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে প্রথম হজযাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করেন এবং হজ ভ্রমণে কর নেওয়া বন্ধ করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কথায় কথায় নিজেদের ইসলামের সেবক দাবি করলেও তাদের আমলে সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বল্পকালীন শাসনামলে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণার্থে গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামোগত পদক্ষেপ যেমন ছিল, তেমনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের বিষয়াদি বিবেচনায় রেখে তিনি ইসলামের প্রচার ও প্রসারে গ্রহণ করেছিলেন বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকরী নানা ব্যবস্থা। তিনি যেমন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, তেমনি বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামের প্রচার-প্রসারের স্থপতিও তিনি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইসলামের প্রচার-প্রসারে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অবদান অনেক। এ সরকার মসজিদ মন্দিরের যে উন্নয়ন করেছেন তা কল্পনাতীত। ১০ হাজার কেটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ প্রকল্প দ্বিতীয় বৃহৎ।
ফরিদুল হক খান বলেন, করোনাকালীন মসজিদের ঈমাম ও মোয়াজ্জিনদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। কওমি মাদ্রাসাকে স্বীকিতি দিয়েছে সরকার। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান এক অধ্যাদেশ জারি করে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বায়তুল মোকাররম সোসাইটি এবং ইসলামিক একাডেমি নামের তৎকালীন দুটি সংস্থার বিলোপ সাধন করে এই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখন সরকারি অর্থে পরিচালিত অন্যতম একটি বৃহৎ সংস্থা হিসেবে বিশ্বেনন্দিত।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ যাবৎ পবিত্র কুরআনের বাংলা তরজমা, তাফসির, হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ, রাসূল (সা.)-এর জীবন ও কর্মের ওপর রচিত ও অনূদিত গ্রন্থ, ইসলামের ইতিহাস, ইসলামি আইন ও দর্শন, ইসলামি অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহাবী ও মনীষীগণের জীবনী ইত্যাদি নানা বিষয়ে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশে ৬৪টি জেলা কার্যালয়, আর্তমানবতার সেবায় ২৮টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির মাধ্যমে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এ বিএম আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান।
বিএনএনিউজ/মনির
