সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : রূপবৈচিত্র্যে সুনামগঞ্জ জেলার টাঙ্গুয়ার হাওর অনন্য। বর্ষায় জল থৈ- থৈ হাওরাঞ্চল শীতকালে ধারণ করে অন্যরূপ। আর সে রূপকে আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তোলে পরিযায়ী পাখির দল। বিশ্বের বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে তুলনামূলক একটু উষ্ণতার সন্ধানে হাজারো মাইল পাড়ি দিয়ে আসা এ সকল পরিযায়ী পাখির দিকে পাখিপ্রেমীদের উৎসুক দৃষ্টির মাঝেই বাইনোকুলার আর ক্যামেরায় নিবিড়ভাবে ব্যস্ত আছে কিছু চোখ।
তারা পাখি গবেষক। রামসার কনভেশনের আওতায় ২০০০ সালে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষিত টাঙ্গুয়ার হাওরে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বন্যপাখি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম। এ গবেষকরা ব্যস্ত সে কাজেই। এ কার্যক্রমের আরেকটি অংশ জলচর পাখিশুমারি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও টাঙ্গুয়ার হাওরের জলচর পাখিশুমারি হচ্ছে। আজ ২ ফেব্রুয়ারি ও আগামীকাল ৩ ফেব্রুয়ারি চলবে এ পাখিশুমারি।
সুইডেনের লিনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) ও বাংলাদেশ বনবিভাগের এই বন্যপাখি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রমটি চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবও এ কার্যক্রমের সহযোগী।
আইইউসিএন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এবিএম সারওয়ার আলম বলেন, ‘১২ দিনব্যাপী এ কার্যক্রমের মধ্যে পাখির পায়ে রিং পড়ানো, স্যাটেলাইট ট্যাগিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে পাখির গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ নানা কর্মকাÊ রয়েছে।’
একই পাখি প্রতিবছর ফিরছে কি না, তা বুঝতে যেমন পাখির পায়ের রিং পরানো হয়, তেমনি স্যাটেলাইট ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহযোগিতায় পাখির গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা যায়, যা পাখি গবেষণা ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণসহ নানা ধরনের গবেষণায় ব্যবহƒত হয়।
জলচর পাখিশুমারির তথ্যমতে, গতবছর জানুয়ারিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে ৩৫ প্রজাতির ৫১ হাজার ৩৬৮টি পাখি ছিল।
যা তার আগের বছরের জানুয়ারিতে ছিল ৪০ প্রজাতির দেড় লাখ পাখি। একইভাবে ২০১৮ সালে ৫৯ হাজার ৫৪২টি পাখি, ২০১৭ সালে ৯১ হাজার ২৩৬টি, ২০১৬ সালে ৪২ হাজার ৫৫৮টি এবং ২০১৫ সালে ৫২ হাজার ২৯৯টি পাখি শুমারি করা হয়।