বিএনএ ডেস্ক: নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় করতে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের পরামর্শে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছ।
ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সম্প্রতি বন্যায় দেশের প্রায় ১১টি জেলা প্লাবিত হওয়ায় কৃষিপণ্য ও পোলট্রিশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ জন্য এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। বন্যার পরও এসব পণ্যের দাম বাড়ার ঝুঁকি আছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারত থেকে আসা পেঁয়াজে বাড়তি শুল্ক। দেশটি সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৫৫০ মার্কিন ডলার ঠিক করে দিয়েছে। পাশাপাশি শুল্ক বাড়িয়েছে ৪০ শতাংশ।
তবে দেশি পেঁয়াজে গত এক মাসে দাম না বাড়লেও গত এক বছরে আগের তুলনায় বেড়েছে ৩১ শতাংশ (দেশি) এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশের বেশি। গত এক মাসে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। গত ২৯ আগস্ট বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ (দেশি) টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১৫ টাকায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে দেশে প্রতিবছর ছয়-সাত লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হলেও বিশেষ অনুমতি ছাড়া ডিম ও আলু আমদানি হয় না। তাই পেঁয়াজ আমদানি থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব এলেও ডিম ও আলু থেকে তেমন রাজস্ব আসে না।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পেঁয়াজ থেকে রাজস্ব আয় করেছে ৪৩০ কোটি টাকা এবং আলু থেকে আয় এসেছে ৭৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
নির্দিষ্ট মেয়াদে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ সিডি ও ৫ শতাংশ আরডি এবং ডিম ও আলু আমদানিতে সিডি ২৫ শতাংশ, আরডি ৩ শতাংশ এবং এআইটি ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলে আমদানি উৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও দাম কমবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ট্যারিফ কমিশনের প্রস্তাব পেয়েছি। বিষয়টি মূল্যায়ন করে শিগগিরিই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। তবে এক মাসে কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। ২৯ আগস্ট প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫২ থেকে ৬০ টাকা। আর ২৯ জুলাই ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর গত বছর জুলাইয়ে ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা।
এদিকে গত জুলাই মাসে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। আর এক বছরে বেড়েছে ৩ শতাংশ। ২৯ আগস্ট প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৩ টাকা। আর ২৯ জুলাই ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আশা করা যায়, শুল্ক প্রত্যাহার করলে স্থানীয় বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ