বিএনএ, ঢাকা: শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) বাস্তবায়িত ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে পুরাতন ঢাকার শ্যামপুরে রোববার (৪ জুন) অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম উদ্বোধন করা হবে।
গুদাম উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
উদ্বোধনের সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্থানীয় সংসদ সদস্য তথা ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, প্রকল্পের ঠিকাদার নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো. আব্দুল্লাহ আল মাকসুস এবং বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ২০১০ সালের ৩ জুন ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ১১৯ জন নিহত হয়। এছাড়া চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এতে নিহতের সংখ্যা ছিল ৭৮ জন। রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সে লক্ষ্যে পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ মজুদের নিমিত্ত গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিপদজনক কেমিক্যাল সাময়িকভাবে সংরক্ষণের নিমিত্ত বিসিআইসির আওতাধীন উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি, শ্যামপুর, ঢাকার জায়গায় গুদাম নির্মাণের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় এগিয়ে আসে। পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো একটি নিরাপদ জায়গায় দ্রুততম সময়ে স্থানান্তরের লক্ষ্যে উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি লি. শ্যামপুর, ঢাকার স্থলে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি জরুরিভিত্তিতে হাতে নেয় সরকার। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে রাসায়নিক দ্রব্যাদি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করা এবং পুরান ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত রাসায়নিক পদার্থগুলো দ্রুত স্থানান্তর ও নিরাপদভাবে সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ।
প্রকল্পটি ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয় এবং সম্প্রতি এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা হলেও প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি তথা সরকারি অনুদান ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বিসিআইসি দিয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ৬ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর নির্মিত এ প্রকল্পটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুইটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ইছামতি নদীর তীরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) স্থায়ীভাবে একটি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণ করছে। ৩১০ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা ‘বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল পার্ক’ প্রকল্পের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে প্লট বরাদ্দের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিএনএনিউজ/বিএম