।। শফিউল আলম ।।
বিএনএ, রাউজান (চট্টগ্রাম): পূর্ব পুরুষের পুরোনো দিনের স্মৃতি বিজড়িত একশ বছরের পুরোনো পালকিতে করে নতুন বউকে ঘরে তুললেন দেশের আলোচিত মানবিকযোদ্ধা ফারাজ করিম চৌধুরী। শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারী) রাতে চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা গ্রামের বাড়িতে পালকিতে করে তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী আফিফা আলমকে ঘরে তোলা হয়।
বধুবরণ অনুষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন ফারাজ করিম চৌধুরী পিতা রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। এর আগে সাধারণ একটি বাসে চড়ে তার সহধর্মীনিকে নিয়ে রাউজান আসেন ফারাজ করিম চৌধুরী। জনপ্রিয় এবং একজন সংসদ সদস্যের সন্তান হয়েও কোনো বিলাসবহুল গাড়ি ছাড়াই একটি বাসে চড়ে রাউজানে নিজের স্ত্রী আফিফা আলমকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি গহিরায় আসেন। এই সময় তাদেরকে রাউজানের মানুষ ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
বিয়ে উপলক্ষে রাউজানের গহিরাস্থ নিজ বাড়ীতে দশ হাজার মানুষের মেজবানের আয়োজন করা হয়। বর্ণিল উৎসবে মেতে উঠেন রাউজানবাসী। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করা এই মানবিকযোদ্ধা কখনো তার নিজের পরিবারের অভাব-অনটন চোখে দেখেননি। তবে অনুভব করতে পারেন গরিব-অসহায়, নির্যাতিত-নিপীড়িত, দুর্ভোগে পড়া মানুষের কষ্ট।
শিশুকাল থেকে ফারাজ করিম চৌধুরীর মানবিক কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হন তার বাবা চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও মাতা ব্যরিস্টার রিদোয়ানা ইউসূফ। সম্ভ্রান্ত পরিবারের নতুন প্রজন্মের একজন বিশ্বের আলোচিত মানবিক যোদ্ধাকে নিয়ে গর্বিত তার গ্রামের বাড়ী রাউজানের মানুষ। তার বিয়েকে ঘিরে রাউজানজুড়ে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। পূর্বপুরুষ খান বাহাদুর আবদুল জব্বার চৌধুরী তার সহধর্মিনি ফাতেমা খাতুন চৌধুরাণীকে বিয়ে করে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার রুহুল্লাহপুর জানাালী চৌধুরী বাড়ী থেকে পালকিতে করে ঘরে এনেছিলেন। একই পালকিতে তাঁর দাদা প্রয়াত একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীও তার সহধর্মীনি প্রয়াত সাজেদা কবির চৌধুরীকে ঘরে তুলেছিলেন। পালকিটি রাউজানের গহিরা বক্সে আলী চৌধুরী বাড়ির ফারাজের দাদার বাড়িতে স্বযত্নে রাখা হয়। ওই পালকি নতুন করে সাজিয়ে ফারাজ করিম চৌধুরী তাঁর সহধর্মীনি আফিফাকে ঘরে নিয়ে যান।
বিয়ের আগেই মসজিদে সাদাসিদে বিয়ে করার ঘোষণা দিয়েছিলেন ফারাজ। দুই লাখ আশি হাজার টাকার দেরমোহরে রংপুরের শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে আফিফা আলমকে বিয়ে করেন তিনি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার এক সপ্তাহ পর গ্রামের বাড়িতে বরণ করা হয় নববধুকে। এর আগে থেকেই তার বাড়িতে ব্যাপক আলোকসজ্জা ও অতিথি আপ্যায়ণের ব্যবস্থা করা হয়। ভিআইপি অতিথিদের আগমণের সুবিধার্তে গহিরা কলেজ মাঠে হেলিপ্যাড প্রস্তুত করা হয়। বিবাহ পরবর্তী মেজবান অনুষ্ঠানে মানবিক ব্যক্তিত্ব ফারাজ করিম চৌধুরী, তাঁর সহধর্মীনি আফিফা আলমসহ ফারাজের শ্বশুর বাড়ীর লোকজন উপস্থিত হন।
অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ সংসদ সদস্য নুরে আলম চৌধুরী লিটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম এমপি, দিপংকর তালুকদার এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, দিলুয়ারা ইউসুফ এমপি, আবদুচ ছালাম এমপি, এস.এম আল মামুন এমপি, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, ভিসি ড. শিরীণ শারমিন চৌধুরী, ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার রাজিব রঞ্জনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দেশের শীর্য পর্যায়ের ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা উপস্থিত হন।
মেজবানে আগত মেহমান ও লোকজনকে খাওয়ানোর সময়ে তদারকি করেন রেলপথ মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল।
বিএনএনিউজ/ বিএম